স্মার্টফোনের সাহায্যে একটি অ্যাপস ও নেভিগেশান পদ্ধতি ইনস্টল করার পরিবর্তে, একটি প্রযুক্তি সংস্থা এমন একটি স্মার্ট গ্লাস তৈরি করছে, যা অগমেন্টেড রিয়েলিটি অর্থাৎ বর্ধিত বাস্তবতার মাধ্যমে ভার্চুয়াল বস্তু এবং তথ্য দেখতে উইন্ডশিল্ড অর্থাৎ গাড়ির সামনের কাঁচে এবং জানালাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।এ বিষয়ে ভিওএ সংবাদদাতা এলিজাবেথ লির এই প্রতিবেদন থেকে জয়তী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন যে, একটি মোবাইল ফোন থেকে দিক-নির্দেশনা পাওয়া সহায়ক হতে পারে, কিন্তু এই পদ্ধতিতে ড্রাইভারকে এখনও রাস্তা থেকে চোখ সরিয়ে একটি ছোট স্ক্রিনে মানচিত্রের দিকে তাকাতে হয়। তবে দিক-নির্দেশনা পাওয়ার একটি নিরাপদ উপায় হিসাবে যদি পুরো উইন্ডশিল্ডটিটা অর্থাৎ গাড়ির সামনের কাঁচটাকেই নেভিগেশন যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে কেমন হয়?
ওয়েরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ভিটালি পোনোমারেভ বলেন, "আমরা অনেক দূর থেকে যে কোন মানুষের থ্রিডি অর্থাৎ ত্রিমাত্রিত ছবি তৈরি করতে পারি, এবং সেগুলি একটি নির্দিষ্ট ধরণের কাঁচের মাধ্যমে দেখা যেতে পারে। আমরা এই কাঁচগুলিকে ‘হলোগ্রাফিক গ্লাস’ বলে থাকি।" সুইস সংস্থা ওয়েরে একটি অনন্য ফিল্ম তৈরি করেছে, কাঁচের দুটি টুকরোর মধ্যে বসানো একটি লেন্স যেরকম ভাবে কাজ করে এটি সেটাই অনুকরণ করে। গাড়ির ড্যাশবোর্ডে থাকা সফ্টওয়্যার এবং লেজার প্রোজেকশন মিলিত হলে, গাড়ীর চালক বর্ধিত বাস্তবতা অর্থাৎ উইন্ডশিল্ডের মাধ্যমে ভার্চুয়াল তথ্য দেখতে পারবেন। ওয়েরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ভিটালি পোনোমারেভ বলেন যে, এই ধরণের অগমেন্টেড রিয়েলিটি বা বর্ধিত বাস্তবতার অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র বিশেষ ধরণের চশমা বা হেডসেট পরলেই অনুভূত হয়।
ওয়েরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভিটালি পোনোমারেভ আরও বলেন, "আমরা মানুষের চোখের রেটিনায়, সরাসরি ভাবে আলোর রশ্মি প্রতিফলিত বা প্রতিবিম্বিত করতে ডিফ্রাকশন অর্থাৎ বিচ্ছুরণ পদ্ধতি ব্যবহার করছি।। বাস্তব জগতে একটি বস্তুকে যেমন দেখতে, ঠিক সেরকমই একটি প্রকৃত থ্রিডি বস্তুর মতো যাতে দেখতে লাগে, তার জন্য আসল বস্তুটি কিভাবে আলো নির্গত করে, সেটাই অনুকরণ করে এই প্রযুক্তিগত পদ্ধতি তৈরি করেছি।" নেভিগেশন অর্থাৎ পথনির্দেশিকা দেওয়া ছাড়াও, এই উইন্ডশিল্ড প্রাথমিকভাবে সেন্সর থেকে নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য তথ্য ব্যবহার করে, যেমন কাছাকাছি চলে আসা অন্যান্য গাড়ি, পথচারী অথবা বস্তুকে সনাক্ত করে নিরাপত্তাজনিত তথ্যগুলি এরা প্রদর্শন করতে পারে।
তবে ওয়েরে কোম্পানির প্রযুক্তি কেবলমাত্র একটি গাড়ির উইন্ডশিল্ড বা সামনের কাঁচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বিমানের জানালা থেকে শুরু করে ট্রেন, বহুতল ভবন, যে কোনও স্বচ্ছ পৃষ্ঠের উপরেই এই বর্ধিত বাস্তবতা প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভব।
ভবিষ্যতে, সমস্ত কিছুই কাঁচের ভিতর দিয়ে অর্থাৎ হোলোগ্রাফিক ডিসপ্লের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা গেম খেলতে পারবেন, সোশ্যাল মিডিয়া অথবা সামাজিক মাধ্যমগুলিতে ঢুকতে পারবেন, তারা কী দেখছেন সে সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য শিখতে পারবেন। ওয়েরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা আশা করেন যে, ২০২৩ সাল নাগাদ যে কিছু কিছু নতুন গাড়ি বাজারে আসতে চলেছে, অগমেন্টেড রিয়েলিটি উইন্ডশিল্ড সেগুলিতে পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।