যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের কয়েকটি সংগঠন একত্রিত হয়ে ওয়াশিংটনে সম্প্রতি বাংলাদেশি ও আমেরিকান ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে Meet Bangladesh: Asia’s Next Big Opportunity শীর্ষক একটি আলোচনাসভার আয়োজন করে ।
ওয়াশিংটন ডিসিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল , ইউ-এস বাংলাদেশ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল , বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এবং জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের , স্কুল অফ অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ , সংক্ষেপে সায়েসের সাউথ এশিয়া স্টাডিজ বিভাগ ।
Meet Bangladesh: Asia’s Next Big Opportunity শীর্ষক এই আলোচনা চক্রের মূল লক্ষ্য ছিল , বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু পরিবর্তনকে তুলে ধরা এবং বিদেশী বিশেষত আমেরিকান উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করা। বাংলাদেশে দারিদ্র ও দূর্নীতি সম্পর্কে যে প্রথাগত ধারণা রয়েছে, তার বাইরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। অনেকেই জানেন না বাংলাদেশের পরিশ্রমি ও দক্ষ শ্রমিকের কথা অনুষ্ঠানের মূল বক্তা , বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা দীপুমণি বলেন যে বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভাল বাসেন কিন্তু এখন ক্রমশই স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত করার জন্যে বাংলাদেশের সরকার ও মানুষ পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্যে , সরকার সব রকমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপুমণি বলছেন যে ভিশন টুয়েন্টি -টুয়েন্টি ওয়া্ন এর জন্য তারা মাপকাঠি নির্ণয় করেছেন এর বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টার পাশাপাশি এই প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ বিশেষত আমেরিকান বন্ধুরা বিনিয়োগ করলে বানিজ্যে অংশ নিলে , বাংলাদেশের প্রয়াসে নিসন্দেহে নতুন গতি সঞ্চারিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর ভাষণে , বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বানিজ্য-বান্ধব পরিবেশ সম্পর্কে বলেন যে বেশ কিছু উপাদান বাংলাদেশকে বিনিয়োগ বান্ধব করে তুলেছে । তিনি বলছেন যে বাং লাদেশের ভৌগলিক অবস্থান , দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মাঝখানে এই দেশটি সেতু বন্ধনের ভূমিকা পালন করছে এবং এ দুটি অঞ্চলে লক্ষযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই উন্নয়ন কার্যক্রমের একটি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকছে। তিনি আরও বলেন যে দক্ষিণের সঙ্গে সংযোগ সাধনের জন্যে বাংলাদেশের সমুদ্রপথ ও বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট একজন শিল্পপতি সালমান রহমান । তিনি বলছেন যে বাংলাদেশকে নিয়ে পুরোনো যে ধারণা , এর দারিদ্র , বন্যা কিংবা খাদ্যাভাবের ধারণা তাতে পরিবর্তন এসছে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশে নাটকীয় পরিবর্তন এসছে । তিনি বলেন যে সহজ ব্যাপারটি হচ্ছে যে গত দশ বছর ধরে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের ও বেশি এবং বস্তু এ বছর এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক পুর্বাভাষ দিয়েছে যে বিশ্ব অর্থনীতির টানাপোড়েন অবস্থা সত্বেও প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশের মতো। সালমান রহমান এর কারণ সম্পর্কে বলেন যে ব্যক্তিমালিকানাধীন ক্ষেত্রগুলোতেই উন্নতি হয়েছে সব চেয়ে বেশি। আর এ ক্ষেত্রে সরকার সহযোগি ভূমিকা পালন করেছে কেবল। আমরা আমাদের কাজ করে গেছি , সাফল্য অর্জন করেছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপুমণি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বান্ধব পরিস্থিতির বেশ কিছু উপাদান তুলে ধরেন , তিনি বলেন
যে বাংলাদেশে তরুণ ও পরিশ্রমি লোকের সংখ্যা অনেক বেশি । বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স এখন ২৫ বছরের নীচে আর বাংলাদেশে শ্রমিকের মূল্য যথেষ্ট প্রতিযোগিতামুলক। তিনি বলেন আমাদের শ্রম শক্তি বিভিন্ন ধরণের কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। Meet Bangladesh: Asia’s Next Big Opportunity শীর্ষক এই আলোচনা চক্রের শেষে উপস্থিত দর্শকদের প্রশ্নের জবাব দেন দীপু মণি ও সালমান রহমান।