যুক্তরাষ্ট্র বুধবার সতর্ক করেছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি রুখতে সে দেশের উপর “সর্বাত্মক চাপ” অব্যাহত রাখা হবে। ইরানে সমৃদ্ধ ও উন্নতমানের ইউরেনিয়ামের মজুদ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে নতুন করে পারমাণবিক বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, “আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালকের বক্তব্য অনুযায়ী, ইরান তাদের উচ্চ গুণমানসম্পন্ন ইউরেনিয়ামের উৎপাদন দ্রুত হারে বৃদ্ধি বজায় রেখেছে। বিশ্বে তারাই একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশ যারা অত্যন্ত উন্নতমানের ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছে এবং এই উৎপাদনের পিছনে তাদের কোনও বিশ্বাসযোগ্য শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নেই।”
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইরান “ঘোরতরভাবে” জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অস্বীকার এবং পরিষদ ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী উভয়েরই “স্পষ্ট ও ধারাবাহিক উদ্বেগ”কে উপেক্ষা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই নির্লজ্জ আচরণের মোকাবিলা ও নিন্দা করতে পরিষদকে অকপট ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
ইরান বছরের পর বছর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক গবেষণা সামরিক উদ্দেশ্যপূরণের জন্য নয়। তবে, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির (জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন বা জেসিপিওএ নামে পরিচিত) অধীনে পরমাণু সংক্রান্ত অঙ্গীকারগুলির প্রয়োগ তারা ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা তাদের অঙ্গীকারগুলির প্রয়োগ একেবারেই বন্ধ করে দেয়। ফলস্বরূপ, আইএইএ আর চুক্তি সংক্রান্ত পরীক্ষা, যাচাই ও নজরদারি করছে না এবং এই কারণে, ইরান ঠিক কী করছে তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
জেসিপিওএ-র বিদ্যমান পক্ষ ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধির প্রচেষ্টা বিষয়ে আলোচনা করতে বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আহ্বান জানায় এবং পরিষদের সদস্য দেশ গ্রীস, পানামা ও দক্ষিণ কোরিয়া এই আহ্বানকে সমর্থন জানিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র জেসিপিওএ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছিল।
জাতিসংঘে ব্রিটেনের ডেপুটি দূত জেমস কারিয়ুকি সংবাদদাতাদের বলেন, “ইরানের অত্যন্ত উন্নতমানের ইউরেনিয়াম উৎপাদন নিয়ে আইএইএ-র সর্বশেষ প্রতিবেদন নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”