২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে বোমা হামলায় ১৩ জন আমেরিকান সেনা নিহতের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে বুধবার ভার্জিনিয়ার ফেডারেল আদালতে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।
বিচার বিভাগ বলছে, ইসলামিক স্টেট খোরাসানের সদস্য মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ ওরফে “জাফর” ২ মার্চ “একটি তালিকাভুক্ত বিদেশি জঙ্গি সংগঠনকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও সম্পদ দেওয়া ও দেওয়ার চক্রান্ত করা এবং এর ফলশ্রুতিতে, মৃত্যুর কারণ হওয়ার” অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো শরিফুল্লাহকে গ্রেপ্তারের সংবাদটি ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেসের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করেন।
২০২১ এর ২৬ আগস্ট কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাবি গেটে বোমা হামলার ঘটনায় প্রায় ১৭০ জন আফগানও প্রাণ হারান।
ওই হামলার দায় নিয়েছিল ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা আইসিস-কে। এই সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত বিদেশি জঙ্গি সংগঠন, যাদের ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
ট্রাম্প তার বক্তব্যে শরিফুল্লাহকে গ্রেপ্তারের অভিযানে সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করে বলেন, “এবং আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষত, পাকিস্তান সরকারকে, এই দানবকে গ্রেপ্তারে সাহায্য করার জন্য”, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এই অভিযানে একাধিক সরকারি সংস্থা কাজ করেছে, যাদের মধ্যে সিআইএ এবং এফবিআই অন্যতম।
পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে এই অভিযানে তার দেশের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান।
“এই অঞ্চল জুড়ে জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে পাকিস্তানের ভূমিকা ও সমর্থনের বিষয়টির স্বীকৃতি ও প্রশংসার জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাই”, পোস্টে বলেন শরিফ।
“আমরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারের ভূমিকা অব্যাহত রাখব”, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এই গ্রেপ্তার এটাই ইঙ্গিত করছে যে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ শেষে এবং তালিবান গোষ্ঠীর ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছালেও দুই পক্ষ কিছু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মালিহা লোদি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “এই গ্রেপ্তারে এটাই প্রকাশ পেয়েছে যে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জঙ্গি দমনে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এ ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বেশ বলিষ্ঠ পর্যায়ে রয়েছে।”