অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

 
ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষার বিষয়ে কোন প্রতিশ্রুতি দেননি

ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষার বিষয়ে কোন প্রতিশ্রুতি দেননি


হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারের বৈঠক। ফটোঃ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।
হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারের বৈঠক। ফটোঃ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।

ইউক্রেনে চলমান সংঘাত ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারকে স্বাগত জানান। ইউরোপের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নেতার শুল্ক আরোপের হুমকি এবং ওই মহাদেশটি নিরাপত্তার জন্য যেন ওয়াশিংটনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনে, এ রকম প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

ট্রাম্প কিয়েভকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের ব্যাপারে কোন প্রতিশ্রুতি দেননি, এমনকি স্টারমার যে শর্তটি চেয়েছিলেন যে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য সন্ধি কার্যকর রাখতে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পেছনে থাকবে, সে প্রস্তাবেও ট্রাম্প সাড়া দেননি।

ইউক্রেনে ভবিষ্যতে সৈন্য মোতায়েনর ব্যাপারে ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। যুক্তরাজ্য ফ্রান্সের প্রস্তাবটি সমর্থন করে তবে পোল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশ সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে।

স্টারমার বলেন , “ আমি সম্পূর্ণ সম্মত যে আমরা স্থায়ী শান্তি চাই , কেবল অস্ত্রবিরতি নয় আর সে জন্য আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন যে ইউক্রেনের শান্তি চুক্তির জন্য ব্রিটেন তার পক্ষে সবটুকুই করবে তবে পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের কোন শান্তি রক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন । তিনি বৃহস্পতিবার বলেন যে “ পশ্চিমা এলিটরা” মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার এই নতুন সংলাপে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি

বৈঠকের আগে ট্রাম্প (তিনি চান, নেটো সদস্যরা প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করে তাদের মোট দেশীয় উৎপাদনের ৫ শতাংশ করুক) নিজের অবস্থান পুনরায় ব্যক্ত করেছেন যে, ইউরোপের এই খাতে খরচ বাড়ানো উচিত। তিনি বুধবার হোয়াইট হাউসে সংবাদদাতাদের বলেন, এই কাজের জন্য ইউরোপীয়দের চেয়ে বেশি কর আমেরিকান করদাতাদের দেয়া উচিত হচ্ছে না।

ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পকে তুষ্ট করতে মঙ্গলবার স্টারমার যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা খাতে নজিরবিহীন ব্যয়-বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন; ২০২৭ সালের মধ্যে সে দেশের জিডিপির ২.৫ শতাংশ এবং পরের বছর ২.৬ শতাংশ এই খাতে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্টারমার।

স্টারমার ব্রিটিশ সংসদের সদস্যদের বলেছেন, “এই সপ্তাহে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যখন সাক্ষাৎ করব তখন আমি স্পষ্ট করে দেব যে, আমি চাই, এই সম্পর্ক আরও মজবুত হোক।” পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দেশের “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক জোট” হিসেবে অভিহিত করেছেন একে।

স্টারমার মঙ্গলবার সংবাদদাতাদের বলেছেন, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর প্রতিরক্ষা খাতে এই ব্যয়-বৃদ্ধি “তিন বছর ধরে ভাবনায়” ছিল। ব্রিটেনের ইতোমধ্যেই নিঃশেষিত বিদেশী সহায়তা সংক্রান্ত বরাদ্দ কাটছাঁট করে বর্ধিত অর্থ জোগান দেওয়া হবে; উল্লেখ্য, সে দেশের জিডিপির মাত্র ০.৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে বিদেশী সহায়তা বাজেটকে।

তিনি স্বীকার করেছেন, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়-বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত “ত্বরান্বিত” হয়েছে কেননা ইউক্রেন বা ইউরোপীয়দের বাদ দিয়েই ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে সমঝোতার পদক্ষেপ নিচ্ছেন এবং স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের হার তিনি হ্রাস করছেন।

স্টারমার বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন, আমাদের আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া উচিত এবং আমি তার সঙ্গে সহমত। এ বিষয়ে তার সঙ্গে আমার ভাবনার মিল রয়েছে।” তিনি বলেছেন, আগামী সংসদে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় আরও বৃদ্ধি করে ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া তার লক্ষ্য।

জার্মান মার্শাল ফান্ডের ভূ-কৌশলী দলের গবেষক জেসিন ওয়েবার বলেন, স্টারমারের কাছে একটি প্রধান বার্তা হল, ইউক্রেন নিয়ে যে কোনও আলোচনার অংশ হতে হবে ইউরোপীয়দের।

XS
SM
MD
LG