ব্যাংককে এক দশকের বেশি সময় ধরে আটক থাকা ৪০ জন উইঘুরকে চীনে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে থাইল্যান্ড সরকারের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হলে উইঘুরদের ওপর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের ঝুঁকি রয়েছে এমন সতর্কতা সত্ত্বেও তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার টার্ক এই বহিষ্কারকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ডের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান।
এক বিবৃতিতে রুবিও বলেন, “এই আইনটি সবচেয়ে অরক্ষিতদের সুরক্ষা সংক্রান্ত থাই জনগণের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের পরিপন্থী এবং মানবাধিকার রক্ষায় থাইল্যান্ডের প্রতিশ্রুতির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। উইঘুররা যেসব দেশে সুরক্ষা চায় সেসব দেশের সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন জাতিগত উইঘুরদের জোর করে চীনে ফেরত না পাঠায়।”
বৃহস্পতিবার রাতে থাইল্যান্ডের পুলিশ প্রধান নিশ্চিত করেছেন, ৪০ জন উইঘুরকে একটি চার্টার্ড বিমানে করে চীনে পাঠানো হয়েছে। ভোরের আগে ডিটেনশন সেন্টার থেকে বিমানবন্দরের দিকে কালো জানালাযুক্ত বেশ কয়েকটি পুলিশ ট্রাকের ছুটে যাওয়ার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল।
চীনের প্রত্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের তুর্কিভাষী মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুররা বেইজিং-এর নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন সরকার এটিকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ২০২২ সালে বলেন, জিনজিয়াং-এ জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি বেইজিং-এর আচরণ ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
চীন থেকে থাইল্যান্ডে পালিয়ে আসা উইঘুররা দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একের পর এক সরকার তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বেইজিং-এর কাছ থেকে তীব্র চাপের মুখোমুখি হয়েছে। শতাধিক বন্দীকে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চীনে ফেরত পাঠানো হয়। এর কয়েক সপ্তাহ পর ব্যাংককের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এরাওয়ান মন্দিরে বোমা বিস্ফোরণে ২০ জন নিহত হয়।
থাই সরকার কখনোই প্রকাশ্যে এই সংযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।