অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

 
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ নিয়ে চীনের নিন্দার পর বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় ‘গঠনমূলক’ আলোচনা

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ নিয়ে চীনের নিন্দার পর বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় ‘গঠনমূলক’ আলোচনা


বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার বৈঠকে চীনা প্রতিনিধিরা। জেনেভা, ১৯ ফেব্রুয়ারি।
বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার বৈঠকে চীনা প্রতিনিধিরা। জেনেভা, ১৯ ফেব্রুয়ারি।

বিশ্ব বানিজ্য সংস্থা( ডব্লিউটিএ) বুধবার বলেছে যে বানিজ্য বিষয়ক উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা ছিল গঠনমূলক। এর আগে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে “ শুল্কের ধাক্কা ” দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে যা বিশ্বের বানিজ্য ব্যবস্থাকে উল্টে দিতে পারে।

ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা সকল পণ্যের উপর ঢালাও ১০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন এবং বেইজিংও পাল্টা শুল্ক আরোপ করে এবং ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ডব্লিউটিও’তে অভিযোগ করে । এটা হয়ত ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি ট্রাম্পের অবস্থানের আগাম পরীক্ষা হতে পারে।

বুধবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউটিও’র মুখপাত্র ইসমাইলিয়া দিয়েং বলেন, আলোচ্য সূচিতে চীনের আনা বানিজ্য নিয়ে এই গোলোযোগ সম্পর্কে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ছ’টি দেশের অধিকাংশই এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিন্তু সংযত থাকারও আহ্বান জানায়।

যুক্তরাষ্ট্র,নিকারাগুয়া, নামিবিয়া, মালায়েশিয়া, ত্রিনিদাদ, টোবেগো এবং রাশিয়া এই আলোচনায় অংশ নেয়, যা ছিল বানিজ্য বিষয়ে বৃহত্তর আলোচনারই অংশ।

দিয়েং আরও বলেন,অধিকাংশ রাষ্ট্রই “ ডব্লিউটিও’র নীতি ও মূল্যবোধ তুলে ধরার গুরুত্বের উপর জোর দেয় এবং বৈশ্বিক বানিজ্য ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ও কার্যকারিতা রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।

ওই বৈঠকে দুটি বানিজ্যিক সুত্র রয়টার্সকে বলে যে শুল্কের বিভাজন সম্পর্কে কিছু দেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, আবার অন্যান্যরা বাজারে বিঘ্ন সৃষ্টি করার অভিযোগে চীনের সমালোচনা করে।

এই প্রথম এই নজরদারি সংস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী শীর্ষ পরিষদ দ্য জেনারেল কাউন্সিলের আলোচ্যসূচিতে বানিজ্য নিয়ে ক্রবর্ধমান সংঘাতের উপর নজর দেওয়া হয়।

শুল্কের ধাক্কা’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পাঠানোএক বিবৃতিতে জানানো হয় যে ডব্লিউটিও ‘তে চীনের রাষ্ট্রদূত লি চেনগ্যাঙ এই সংগঠনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বলেন, এই ধরণের ‘শুল্কের ধাক্কা’ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে বাড়িয়ে তোলে, বৈশ্বিক বানিজ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং অভ্যন্তরীন মূদ্রাস্ফীতি, বাজারে বিকৃতি অথবা এমনকী বিশ্বব্যাপী মন্দা সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বলেন , “সব চেয়ে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একপাক্ষিকতা নিয়ম-ভিত্তিক বহু জাতিক বানিজ্য ব্যবস্থার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

পাল্টা যুক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দূত ডেভিড বিসবী চীনের অর্থনীতিকে “আক্রমণকারী বাজারবিহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা” বলে অভিহিত করেন এবং ডব্লিউটিও’র নিয়ম লংঘন ও পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য চীনকে অভিযুক্ত করেন।

আলোচনার কৌশল

কোন কোন প্রতিনিধি বলেন তারা চীনের হস্তক্ষেপকে ডব্লিউটিও’র নিয়মাবলীর প্রতি সমর্থন জানানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন – যে বিষয়টি চলমান বৈশ্বিক বানিজ্য আলোচনায় চীনের মিত্রদের সমর্থন আদায়ে চীনকে সাহায্য করতে পারে।

ডব্লিউটিও ‘তে বিশ্বের দুটি বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যকার বিবাদ ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। বেইজিং ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে এবং ওয়াশিংটন বলছে ডব্লিউটিও ‘তে বেইজিং’এর “ উন্নয়নশীল দেশের” পরিচিতি মোটেই প্রাপ্য নয়।

ট্রাম্প প্রশাসন অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার কিংবা সংযুক্ত না থাকার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে কিন্তু ডব্লিউটিও এখনও এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের প্রধান বিবেচ্য বিষয় নয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন বানিজ্য প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রীয়ার ডব্লিউটিও’কে “ প্রচুর ত্রুটিপূর্ণ” বলে অভিহিত করেছেন।

XS
SM
MD
LG