অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

 
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিকরা

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিকরা


ফাইল ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। 
ফাইল ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। 

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে গত সপ্তাহের ফোনালাপে দুই নেতা যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন।

বাংলাদেশের বড় দলগুলোর সবাই তিন বছরের এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।

অবশ্যই এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এই যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। কূটনৈতিকভাবে দুই দেশের মধ্যকার (রাশিয়া-ইউক্রেন) সব সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।

এই যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিতঃ শামা ওবায়েদ

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল, বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "অবশ্যই এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এই যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। কূটনৈতিকভাবে দুই দেশের মধ্যকার (রাশিয়া-ইউক্রেন) সব সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যদি এই উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে তাকে আমরা স্বাগত জানাই।"

বিএনপি সব সময় যুদ্ধের বিপক্ষে, শান্তির এবং সাম্যের পক্ষে বলে উল্লেখ করেন শামা ওবায়েদ।

বিএনপি ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু হওয়ার পর বিএনপি একটা বিবৃতি দেয়। সেই বিবৃতি প্রসঙ্গে শামা ওবায়েদ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "তখন আমরা মানবাধিকারের দিক থেকে ইউক্রেনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে দুই দিকে (ইউক্রেন-রাশিয়া) এতগুলো প্রাণহানি, অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, যা একেবারে কাম্য নয়।"

এরমধ্যে পৃথিবীর পরাশক্তিগুলোর অনেক ষড়যন্ত্র থাকে। সেই সম্পর্কে একটু সচেতন থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি।

পৃথিবীর পরাশক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিতঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার

জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "পৃথিবীর যেকোন সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা নিষ্পত্তি ও সমাপ্তি এবং মীমাংসার উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে, এরমধ্যে পৃথিবীর পরাশক্তিগুলোর অনেক ষড়যন্ত্র থাকে। সেই সম্পর্কে একটু সচেতন থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি।"

তিনি বলেন, "এই যুদ্ধের অবসান হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের প্রয়োজনীয় অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অনেক পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে চ্যানেলগুলো সহজ হবে।"

প্রায় দেড় ঘন্টা তারা আলাপ করেছেন। এর ফলোআপও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং সার্বিকভাবে বলব আমি খুবই হোপফুল।

সার্বিকভাবে বলব আমি খুবই হোপফুলঃ হাছান মাহমুদ

ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। শুধু পুরো ইউরোপই নয়, গোটা বিশ্বে এই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমরা বাংলাদেশ অনেক দূরে হলেও আমাদের দেশেরও এটার (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের) অনেক নেগেটিভ প্রভাব আছে। পুরো পৃথিবী জুড়ে আছে (নেগেটিভ প্রভাব)। সুতরাং এই সংঘাত এতদিন ধরে চলছে, এটা বন্ধ হলে সবার জন্যই তা ভালো। পুরো পৃথিবীর মানুষের জন্য ভালো। ইউক্রেনের জন্য ভালো, রাশিয়ার জন্য ভালো এবং ইউরোপের জন্য তো অবশ্যই ভালো। ফলে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে আমি মনে করি একটা ভালো উদ্যোগ।"

তিনি আরো বলেন, "আমরা দেখেছি প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেছেন, প্রায় দেড় ঘন্টা তারা আলাপ করেছেন। এর ফলোআপও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং সার্বিকভাবে বলব আমি খুবই হোপফুল।"

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (মাঝে), হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ (ডানে), এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে ২০২৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের রিয়াদে দিরিয়াহ প্রাসাদে রুশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের পর দেখা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (মাঝে), হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ (ডানে), এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে ২০২৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের রিয়াদে দিরিয়াহ প্রাসাদে রুশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের পর দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার তিন বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘ন্যায্য’ ও ‘টেকসই’ সমাধান নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, তবে শান্তি অর্জনের জন্য মস্কো ও কিয়েভ উভয়কেই ছাড় দিতে হবে।

যুদ্ধ অবসান এবং ওয়াশিংটন-মস্কো বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের উন্নতির প্রথম প্রচেষ্টায় তিনি এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা সৌদি আরবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং তার সহযোগীদের সাথে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। এরপর রুবিও তার মূল্যায়ন প্রকাশ করেন।

রুবিও বলেন, তিনি ‘নিশ্চিত’ যে যুদ্ধ শেষ করতে মস্কো ‘গুরুতর পদক্ষেপ’ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক। তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালানোর মধ্যে দিয়ে এই যুদ্ধ শুরু করেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ এই লড়াইয়ে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকসহ হাজার হাজার রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে।

(এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আদিত্য রিমন ও হাসিবুল হাসান।)

XS
SM
MD
LG