সরকারে থাকার খায়েশ থাকলে পদত্যাগ করে নির্বাচনে আসতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে যশোর শহরের টাউনহল ময়দানে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, "যদি সরকারে থাকার খায়েশ জাগে, তাহলে পদত্যাগ করুন। এরপর নির্বাচনে আসুন। সরকারের বাইরে গিয়ে নতুন দল করুন, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সরকারে থেকে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না।"
"আগে জাতীয় নির্বাচন দিন, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কোনোভাবেই আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিএনপি মেনে নেবে না," বলেন তিনি।
নিত্যপণ্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ও ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত বন্ধের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কিনা; খুব দ্রুতই সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। নিরাপরাধ আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমা চেয়ে স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের ষষ্ঠ অধিবেশনে শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থানে অসন্তুষ্ট বিএনপি নেতৃত্ব
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি’র নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন নিয়ে টাল-বাহানা করছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা জাতীয় নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
“ইউনূস সরকার নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছে," বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বলেন।
বিএনপি’র আরেক নেতা, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সময়মত নির্বাচন না দিলে বিএনপি রাজপথে নামতে বাধ্য হতে পারে।
“‘আমার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ — একটা নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। আপনারা সময়মতো নির্বাচনটা দেন, তাতে আপনারা ফুলের পাপড়িতে ঢাকা পড়বেন,” রায়কে উদ্ধৃত করে ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো জানায়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসবে: আসিফ মাহমুদ
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কিনা; খুব দ্রুতই সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত আসবে বলে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। নিরাপরাধ আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমা চেয়ে স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ বলেন, "এটা (স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনপ্রতিনিধি না থাকা) আমাদের প্রত্যেকদিনের সমস্যা, আমাদের অফিসাররা অধিকাংশই অতিরিক্ত দায়িত্বে বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের সংস্থায় কাজ করছেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে স্যার প্রশাসক দেন, নির্বাচন দেন।"
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা জানান, এ বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে হয়নি। তবে খুব দ্রুতই একটি সিদ্ধান্ত আসবে। জনপ্রতিনিধি নির্বাচন কিংবা প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো পরিচালনা করা হবে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ভালো হয় কিনা—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অবশ্যই ভালো হয়। উই হ্যাভ টু রান কান্ট্রি। দেখা যায় একটি ভালো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে স্থানীয় নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে।"