অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

 
চেরনোবিলের বাইরের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত: নিশ্চিত করেছে আই-এ-ই-এ

চেরনোবিলের বাইরের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত: নিশ্চিত করেছে আই-এ-ই-এ


এক সময়কার চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যূত্ কেন্দ্রে ড্রোন আক্রমণের পর, ইউক্রেন সামরিক বাহিনীর একজন একটি গাড়িতে বিমান বিধ্বংসী বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইউক্রেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০২৫।
এক সময়কার চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যূত্ কেন্দ্রে ড্রোন আক্রমণের পর, ইউক্রেন সামরিক বাহিনীর একজন একটি গাড়িতে বিমান বিধ্বংসী বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইউক্রেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০২৫।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশন (আই-এ-ই-এ) শুক্রবার নিশ্চিত করেছে যে ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির অবশিষ্টকে সুরক্ষাকারী একটি ভবনের দেয়ালের বাইরের অংশ ড্রোন আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এতে আগুন ধরে যায়। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল পারমাণবিক দূর্ঘটনা ইতিহাসের সব চেয়ে মারাত্মক ঘটনা ছিল।

এবার কিয়েভ থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই স্থানে আক্রমণের জন্য ইউক্রেন রাশিয়াকে দোষারোপ করেছে তবে রাশিয়া তা অস্বীকার করে।

আই-এ-ই-এ’র ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে ওই স্থাপনায় অবস্থিত তাদের টিম জানায় যে তারা স্থানীয় সময় রাত ১:৫০ মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়। তারা বলছে যে সেখানে তাদের টিমের বাসস্থান থেকেই আগুন ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা টিমকে জানান যে চেরনোবিলের ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লি থেকে রেডিও অ্যাক্টিভ নিঃসরণ বন্ধ করতে এবং সেটিকে বাইরের কোন ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে নির্মিত নিউ সেফ কনফাইনমেন্ট (এনএসসি)’তে একটি ড্রোন আঘাত করে।

টিম আরও জানায় যে আগুন নেভাতে কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে দমকল বাহিনীর লোকজন ও যানবাহন চলে যায়। তবে পরে বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে সেখানে মাঝে মাঝে আগুন দেখা যায়।

চেরনোবিল, ইউক্রেন।
চেরনোবিল, ইউক্রেন।

টিম বলে যে ড্রোনের বিস্ফোরণের প্রভাবে তারা এই সুরক্ষা কাঠামোর বাইরের দিকে ভাঙনের চিহ্ন দেখতে পান।ইউক্রেনের নিউক্লিয়ার রেগুলেটারি কর্মকর্তারা শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন যে এই সুরক্ষা ভবনের বাইরের দিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ভেতরে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত চলছে।

আইএইএ বলছে এই এনএসসি ভবনের ভেতরে ও বাইরে বিকিরণের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে এবং কারও হতাহত হবার খবর পাওয়া যায়নি। তবে এই সংস্থার মহাপরিচালক বলেন যে এই ঘটনা “ অত্যন্ত উদ্বেগজনক” এবং বলেন “ এটি সামরিক সংঘাতের সময়ে পারমানবিক সুরক্ষার ব্যাপারে একটা চলমান ঝুঁকিকেই তুলে ধরে।

১৯৮৬ সালে এপ্রিল মাসে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যূত্ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ও আগুনে, চুল্লির ভবনটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং পরিবেশে বিপুল পরিমাণ তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণ ঘটে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় এই বিস্ফোরণে সঙ্গে সঙ্গে ৩১ জন প্রাণ হারান এবং পরবর্তী বিকিরণের সামনে পড়ে ঠিক আর কতজন প্রাণ হারান সেটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে । তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তেস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ায় এই বিকিরণের সম্মুখীন হন বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রায় ৮৪ লক্ষ লোক।

শুক্রবার সংবাদদাতাদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দ্যমিত্রি পেসকভ এ ব্যাপারে রাশিয়ার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে বলেন রাশিয়া পারমাণবিক অবকাঠামোর উপর আঘাত করে না। তিনি ইউক্রেনের এই দাবিকে উস্কানিমূলক বলে অভিহিত করেন।

ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ইউরোপের বৃহত্তম,ঝাপোরিঝয়িা পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্রে চারপাশে তিনি বছর ধরে চলতে থাকা লড়াই বার বার পারমাণবিক দূর্ঘটনার আশংকা সৃষ্টি করেছে।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স ও এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG