পাকিস্তান ও তুরস্ক বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে হাই লেভেল স্ট্র্যাটেজিক কোঅপারেশন কাউন্সিলের সপ্তম দফার বৈঠকে প্রতিরক্ষা, খনিজ উত্তোলন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা গভীরতর করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে সর্বোচ্চ স্তরের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ফোরামে সহ-সভাপতিত্ব করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
বৃহস্পতিবার প্রতিনিধি-স্তরের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর দুই পক্ষ ২৪টি স্বাক্ষরিত নথি আদানপ্রদান করেছে; এর মধ্যে রয়েছে একটি যৌথ ঘোষণা, কয়েকটি চুক্তি ও বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক চুক্তি।
বৈঠকের পর লাইভ সম্প্রচারিত ভাষণে এরদোয়ান বলেছেন, “আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আমরা সহমত হয়েছি।”
যৌথ ঘোষণার বয়ান প্রকাশ করা হয়নি। তবে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর, বহুমুখী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার নকশা রয়েছে এতে।”
শরিফ ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি রাজধানীর কাছে এক সামরিক বিমান ঘাঁটিতে বুধবার রাতে সাড়ম্বরে স্বাগত জানিয়েছেন তুরস্কের নেতাকে।
উভয় পক্ষ বিমান বাহিনীর ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধবিগ্রহ ও প্রতিরক্ষা শিল্পে উৎপাদনে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে; সেই সঙ্গে তুরস্কের সেক্রেটারিয়েট অফ ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষাগত উৎপাদন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ ও পাকিস্তানের নৌ গবেষণা ও উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের মধ্যে আরেকটি চুক্তি হয়েছে।
পাকিস্তান ও তুরস্ক তাদের বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তির মানোন্নয়নেও সম্মত হয়েছে। প্রায় ১৫০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে বার্ষিক ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সংক্রান্ত আগের অঙ্গীকারকে পুনরায় ব্যক্ত করা হয়েছে।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অংশ হিসেবে গঠিত বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগ টানতে পাকিস্তান হিমশিম খাওয়া সত্ত্বেও শরিফ ঘোষণা করেছেন, শিল্পগত উৎপাদনের জন্য তুরস্কের সংস্থাগুলি পাকিস্তানে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করবে।
হাইড্রোকার্বনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সহযোগিতার চুক্তিকে সংশোধন করতে উভয় পক্ষ এক বিধি-বন্দোবস্তে সম্মত হয়েছে এবং পাকিস্তানের বিদ্যুৎ স্থানান্তরে সাহায্য করতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
বৈঠকের পর সংক্ষিপ্ত ভাষণে শরিফ তুরস্কের সঙ্গে যৌথভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছেন। পাকিস্তানি নেতা সহিংসতার উৎস হিসেবে আফগানিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছেন।