যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে তার অঙ্গীকার পুনরায় ব্যক্ত করেছেন; এর ফলে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক পর্যায় পেরিয়ে এই চুক্তি সম্প্রসারণের বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের উপর চাপ বৃদ্ধি পেল।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, দুর্ভিক্ষকে বড়দাগে প্রতিহত করা গেছে; যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ১২৬০০টির বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজা ছিটমহলে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, তবে চুক্তি যদি সম্প্রসারিত না হয় তাহলে অনাহার ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি ফিরে আসতে পারে।
গাজায় দুই দিনের সফরের পর জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, “পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ এবং মানুষ এখনও অভুক্ত। যুদ্ধবিরতি যদি ব্যর্থ হয়, যুদ্ধবিরতি চুক্তি যদি ভেঙে যায় তাহলে খুব দ্রুত ওই (দুর্ভিক্ষের মতো) পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে।”
এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে সুপার বোলে যাওয়ার পথে ট্রাম্প সংবাদদাতাদের বলেন, হামাস কর্তৃক মুক্তি দেওয়া রুগ্ন জিম্মিদের দেখার পর পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ধৈর্য হারাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “আমি আজ জিম্মিদের ফিরে আসতে দেখলাম এবং তাদের দেখে মনে হচ্ছিল, তারা যেন হলোকস্ট থেকে বেঁচে ফিরছেন। তারা ভয়াবহ অবস্থায় ছিলেন। তারা কৃশ ও ক্ষীণকায় হয়ে পড়েছেন। তাদের দেখে মনে হল, তারা যেন বহু বছর আগের হলোকস্ট থেকে বেঁচে ফেরা মানুষ। আমি জানি না, কতদিন আমরা এটা সহ্য করতে পারব।”
তিনি তার অঙ্গীকারের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে।
তিনি বলেন, “আমি গাজা কিনতে ও মালিকানা নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এর পুনর্নির্মাণ বিষয়ে যতদূর আমরা বলতে পারি তা হল, এই ভূখণ্ডের একেকটি অংশ নির্মাণের দায়িত্ব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে দিতে পারি। অন্যেরা আমাদের পৃষ্টপোষকতায় এটি করতে পারে। তবে, আমরা তার মালিকানা নিতে, এবং সেখানে হামাস যাতে ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করতে আমরা দায়বদ্ধ। পিছনে ফেরার কোনও জায়গা নেই। জায়গাটা এখন ধ্বংসস্তুপ। বাকিটাও ধ্বংস করা হবে।”
গাজার যুদ্ধবিরতি রবিবার এক নতুন মাইলফলক অতিক্রম করেছে । ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নেতজারিম করিডর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে; করিডরটি এক সরু ভূখণ্ড যা এই অঞ্চলকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। এর ফলে আরও অনেক ফিলিস্তিনি উত্তরাঞ্চলে (যেখানে তারা একসময় বাস করত) ফিরে আসছে, তবে দীর্ঘ ১৫ মাসের লড়াইয়ে এই ভূখণ্ডের প্রায় সকল কাঠামোয় যুদ্ধে মাটির সাথে মিশে গেছে।
হামাস শনিবার তিনজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল ১৮৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটাই পঞ্চম বিনিময়।