ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব ধরনের বিদেশি উন্নয়ন সহায়তা উদ্যোগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে। এই সময়ে যাচাই করে দেখা হবে কোন কোন উদ্যোগ প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ (সবার আগে যুক্তরাষ্ট্র) নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করায় বিশ্বজুড়ে অগণিত মানুষের প্রাণের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে বলে সতর্ক করেছে ত্রাণ সংস্থা ও মানবাধিকার ওয়াচডগ সংস্থাগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ। দেশটি প্রেসিডেন্ট’স ইমারজেন্সি প্ল্যান ফর এইডস রিলিফ বা পিইপিএফএআরের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে এইডস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে থাকে। ২০২৩ অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় সাত হাজার কোটি ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে, যার বেশিরভাগ অংশই গেছে দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমে।
গত সপ্তাহে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে জরুরি খাদ্য সহায়তা ছাড়া বাকি সব ধরনের সহায়তা স্থগিত করেন। দেশের পররাষ্ট্রনীতিকে তার নিজস্ব আমেরিকা ফার্স্ট নীতির সঙ্গে সমন্বিত করার জন্যই এই উদ্যোগ নেন তিনি। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি আগামী ৯০ দিনের জন্য নতুন কোনো সহায়তা অঙ্গীকার ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিল বিতরণ স্থগিত করেছেন। এই সময়টায় বর্তমানে প্রচলিত উদ্যোগগুলো নিরীক্ষা করা হবে।
এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সম্প্রদায়, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মঙ্গলবার একটি মেমোর মাধ্যমে ঘোষণা করেন, কোন কোন উদ্যোগ স্থগিতাদেশের বাইরে থাকবে। এগুলোর মধ্যে আছে জীবন বাঁচানোর ওষুধ, চিকিৎসা সেবা, খাদ্য, আশ্রয় ও সংশ্লিষ্ট সহায়তা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের আদেশের একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয়ের মতে, তারা নিশ্চিত করতে চাইছে যে (সহায়তার) প্রকল্পগুলো যেন “কার্যকরী থাকে এবং আমেরিকা ফার্স্ট নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়”।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন থেকে আর এমন কোনো উদ্যোগে অন্ধের মতো অর্থ দেবে না যেখান থেকে আমেরিকার মানুষের পাওয়ার কিছু নেই।” “কঠোর পরিশ্রমী করদাতাদের অর্থের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত বিদেশি সহায়তা নিরীক্ষা ও পুনর্বিন্যাস করা শুধু সঠিক কাজই নয়, নৈতিক অবস্থান বিচারে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।”
কিম লুইস এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন। কিছু তথ্য রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।