অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আটক উইঘুর সম্প্রদায়ের ৪৮ সদস্যের অনশন; থাইল্যান্ডের উপর বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ


ফাইল—এই ছবিতে ব্যাংককের ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টার দেখা যাচ্ছে। এখানে আটক আছেন উইঘুররা। ১১ জানুয়ারি, ২০২৫।
ফাইল—এই ছবিতে ব্যাংককের ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টার দেখা যাচ্ছে। এখানে আটক আছেন উইঘুররা। ১১ জানুয়ারি, ২০২৫।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডে আটক উইঘুর সম্প্রদায়ের ৪৮ জন সদস্যের দুর্দশার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে এসেছে। চীনে ফেরত পাঠানোর সম্ভাব্য উদ্যোগের প্রতিবাদে তারা টানা ১৫ দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

২০১৪ সাল থেকে ব্যাংককের ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে (আইডিসি) আটক আছেন উইঘুর সম্প্রদায়ের ওই ৪৮ সদস্য। অভিযোগ মতে, তারা নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছিলেন। এক দশকেরও বেশি সময় সেখানে আটক থাকার পর তাদের ভবিষ্যত এখন সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন মহল থেকে থাইল্যান্ডের প্রতি মানবাধিকার বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান আসছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ডের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার দিনের শেষভাগে ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, ওয়াশিংটন “এই পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে” এবং “বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যকে আমলে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে”।

মুখপাত্র ভয়েস অফ আমেরিকাকে আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র থাই সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছে।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আটক থাকা উইঘুরদের বিষয়ে (এখনো) “কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি”।

অধিকারকর্মীদের সতর্কবাণী

থাই কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করলেও মানবাধিকার কর্মীরা এ বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান। উইঘুর বন্দিদের চীনে প্রত্যাবাসন করা হলে তাদের ওপর ভয়াবহ পরিণতি নেমে আসার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তারা।

২০১৪ সালে আরও ৩০০ উইঘুরের পাশাপাশি এই ৪৮ জন পুরুষ চীনের ইউনান প্রদেশের মানব পাচার পথ ধরে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন। তাদেরকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডে আটক রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালে তাদের মধ্যে ১০৯ জনকে জোর করে চীনে প্রত্যাবাসন করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। চীনে যাওয়ার পর তাদের নিয়তি সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, ১৭৩ জন নারী ও শিশুকে তুরস্কে থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে দুই শিশুসহ মোট পাঁচ জন আটক থাকা অবস্থায় উইঘুর মারা গেছেন।

চীনের প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, চীন জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে। তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তাদের দাবি, ওই প্রদেশে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করছে; যা বেইজিংয়ের ভাষায় “তিন অশুভ শক্তির” বিরুদ্ধে সংগ্রাম।

ব্যাংককে নিযুক্ত চীনের দূতাবাস গত বুধবার অভিযোগ করেছে, থাইল্যান্ডে আটক উইঘুরদের সঙ্গে জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। `

এই প্রতিবেদনে নাইকি চিং ও রাত্তাফোল ওনসানিৎ অবদান রেখেছেন।

XS
SM
MD
LG