অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে অর্থ কেলেঙ্কারিতে দীর্ঘ কারাদণ্ড 


পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (ডানে) ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি লাহোর হাইকোর্টের এক দফতরে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য রাখছেন। লাহোর, পাকিস্তান। ফাইল ফটোঃ ১৭ জুলাই, ২০২৩।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (ডানে) ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি লাহোর হাইকোর্টের এক দফতরে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য রাখছেন। লাহোর, পাকিস্তান। ফাইল ফটোঃ ১৭ জুলাই, ২০২৩।

পাকিস্তানের এক দুর্নীতিদমন আদালত বিতর্কিত অর্থ কেলেঙ্কারিতে সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে শুক্রবার যথাক্রমে ১৪ বছর ও ৭ বছর “সশ্রম কারাদণ্ড” দিয়েছে। খান যখন দফতরে দায়িত্বে ছিলেন তখন এই অভিযোগ উঠেছিল।

রাওয়ালপিণ্ডি কারা-চত্বরের (২০২৩ সালের আগস্ট থেকে এখানেই বন্দি রয়েছেন খান) মধ্যে স্থাপিত ট্রাইবুনাল বারবার বিলম্বিত রায়ে জানিয়েছে, খানকে সাড়ে ৩ হাজার ডলার ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে এই অর্থের অর্ধেক জরিমানা দিতে হবে। রায় ঘোষণার পর সাবেক ফার্স্ট লেডিকে আদালত চত্বর থেকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৮ থেকে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ৭২ বছর বয়সী ইমরান খান ও তার স্ত্রী আল-ক্বাদির বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন এবং এই প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে; এই মামলা এর সঙ্গেই সম্পর্কিত।

এই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, দরিদ্রদের জন্য অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে এই প্রকল্পের জন্য পাকিস্তানের রিয়েল এস্টেট টাইকুন মালিক রিয়াজের থেকে অনুদান হিসেবে তারা জমি নিয়েছিলেন। প্রসিকিউটররা জোর দিয়ে বলেছেন, এর বিনিময়ে খান তার কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং রিয়াজের থেকে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের উদ্ধার করা প্রায় ২৩২ মিলিয়ন ডলার ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন।

রিয়াজের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খানের যুক্ত থাকার কথিত অভিযোগের ফলে তিনি আইনি জটিলতায় পড়েন। তার আইনি প্রতিনিধিরা শুক্রবারের রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেছেন, খানকে রাজনীতির শিকার বানানো হয়েছে। রিয়াজকে সুবিধা দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তাকে তারা “সর্বৈব বানানো” বলে অস্বীকার করেছেন।

আদালতের রায়ের পর খান সংবাদদাতাদের বলেছেন, “আজকের রায় বিচারবিভাগের মর্যাদাকে কালিমালিপ্ত করেছে। আমার স্ত্রী গৃহবধূ। এই জাল মামলার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।” খানের এই মন্তব্য তার দল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে।

বিস্তারিত না জানিয়েই খান বলেছেন, “একজন একনায়ক এই সব করছেন।” তিনি এর আগে পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সামরিক প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানিয়েছিলেন, রাজনীতি থেকে তাকে দূরে রাখতে তার বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা করা হয়েছে এবং এর পিছনে রয়েছেন এই জেনারেল। তবে, সামরিক বাহিনী এই অভিযোগকে খারিজ করে দিয়েছে।

প্রমাণের অভাবে মামলাগুলিকে আপিল আদালত হয় বাতিল করেছে, নয়ত উল্টে দিয়েছে। তবে, খান যখনই কোনও মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন তখনই তাকে জেলে আটকে রাখতে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ লাগাতার একের পর এক নতুন অভিযোগ দায়ের করেছে।

ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দল শুক্রবার বলেছে, আল ক্বাদির ট্রাস্ট মামলার “দৃঢ় ভিত্তির অভাব রয়েছে” এবং আপিল আদালতে এটি “খারিজ হয়ে যেতে বাধ্য।”

XS
SM
MD
LG