জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সোমবার এক জোরালো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে; কম্পনের প্রাথমিক মাত্রা ছিল ৬.৯। সুনামি সতর্কতা ও নির্দেশিকার কারণে মানুষকে উপকূল এলাকাগুলি থেকে দূরে সরে যেতে বলা হয়। তবে পরে এই নির্দেশিকা বাতিল করা হয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কিছু উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র চলে যেতে বলা হয়েছিল।
এনএইচকে টিভি জানিয়েছে, কুয়ুশু এলাকায় সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে এক ব্যক্তি সামান্য আহত হয়েছেন। মিয়াজাকি স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে অনেক যাত্রী আটকে পড়েন।
এনএইচকে বলেছে, কম্পনের আধঘন্টার মধ্যে আনুমানিক ১ মিটার (৩.২ ফুট) উচ্চতার সুনামি স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল। একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়াজাকি বন্দরে ২০ সেন্টিমিটার (০.৭ ফুট) উঁচু জল জমে থাকতে দেখা গেছে।
সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, রাত ৯টা ১৯ মিনিটে কম্পন অনুভূত হওয়ার ঠিক পরেই দক্ষিণ-পশ্চিম কুয়ুশু দ্বীপের মিয়াজাকি (ভূমিকম্পের কেন্দ্র), শিকোকু দ্বীপের কোচি এলাকার জন্য সুনামি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তবে, মাঝরাতের আগে দ্রুত এই নির্দেশিকা বাতিল করা হয়।
নদীসহ জলাশয় থেকে দূরে থাকতে মানুষকে সতর্ক করা হয়। এজেন্সির কর্মকর্তা শিজেকেই আওকি সংবাদদাতাদের বলেছেন, ভূমিধ্বস ও সেই সঙ্গে বাড়ির মধ্যে জিনিসপত্র পড়ে যাওয়ার দিকে নজর দেওয়া উচিত সকলের। তিনি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহেও, বিশেষ করে আগামী সপ্তাহের প্রথম দুই-তিন দিন ‘আফটারশক’ আঘাত হানতে পারে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, ভূপৃষ্ঠের ৩০ কিলোমিটার (১৮.৬ মাইল) গভীরে সৃষ্ট এই কম্পন সে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মূল দ্বীপ কুয়ুশুর বিস্তীর্ণ এলাকাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
এনএইচকে টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, যানচলাচল অব্যাহত রয়েছে এবং রাস্তাগুলি বেশ আলোকিত, অর্থাৎ বিদ্যুৎ কাজ করছে। এই এলাকায় পারমাণবিক কেন্দ্রের জন্য নির্মিত একাধিক নজরদারি ঘাঁটিতে কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি।
সর্বশেষ এই ভূ-কম্পন কতটা তথাকথিত নানকাই ট্রাফ কম্পনের সঙ্গে সম্পর্কিত তা পরিমাপ করতে সোমবার বিকালে আবহাওয়া সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বৈঠক করেছেন, তবে আপাতত অতিরিক্ত কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
১৯৪৬ সালে শিকোকুতে নানকাই ট্রাফ ভূমিকম্পে ১৩০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত বছরের আগস্ট মাসে এই এলাকায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল।