লস অ্যাঞ্জেলেসের দমকল বাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার টানা চতুর্থ দিনের মতো হাজার হাজার বাড়ি ধ্বংসকারী ও কমপক্ষে ১১ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটানো দাবানলের লেলিহান শিখা নিয়ন্ত্রণের লড়াই অব্যাহত রেখেছেন।
কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, একাধিক আগুনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলে এবং কর্মীরা ধ্বংসস্তূপে ঠিকমতো তল্লাশি চালাতে সক্ষম হলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হালনাগাদ করা মৃতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রাতভর অভিযানের পর শুক্রবার সকালেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। এ সময়টুকুতে বাতাসের বেগ কমে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে হেলিকপ্টার থেকে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার বন ও অগ্নিসুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দাবানল প্যালিসেডের মাত্র আট শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এই আগুনে আট হাজার হেক্টরেরও বেশি জমি পুড়ে গেছে।
দ্বিতীয় বৃহত্তম ইটন দাবানলের তিন শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে সরকারি সংস্থাটি। এই আগুনে প্রায় ছয় হাজার হেক্টর ভূমি পুড়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে প্যালিসেড ও ইটনের অগ্নিকান্ড ইতোমধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই দুই দাবানলে যৌথভাবে ৮৫ বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড পুড়িয়েছে এবং প্রায় ১০ হাজার স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে দাবানলের কারণে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মানুষকে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে হাজার হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং দশ হাজারেরও বেশি হেক্টর ভূখণ্ড পুড়ে গেছে।
এই মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বিভাগ লস অ্যাঞ্জেলেসে পাঁচটি সক্রিয় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। এগুলো হলো: প্যালিসেড, ইটন, হার্স্ট, লিডিয়া ও কেনেথ।
ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বিভাগ বলছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কেনেথ, হার্স্ট ও লিডিয়ার দাবানল যথাক্রমে ৩৫ শতাংশ, ৩৭ শতাংশ ও ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের দমকলকর্মীরা বৃহস্পতিবার সানসেট দাবানলকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। এই আগুনের কারণে বাধ্যতামূলক ভাবে সবাইকে হলিউড ও হলিউড হিলস ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ফার্ন রবিনসন ও ক্রিস হ্যানাস এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন। কিছু তথ্য এপি ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।