অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পঞ্চগড়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি


বাংলাদেশে শৈত্যপ্রবাহ
বাংলাদেশে শৈত্যপ্রবাহ

পঞ্চগড়ে এক অংকে নেমেছে তাপমাত্রা। ঘনকুয়াশার পাশপপাশি বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এ জেলার জনজীবন। ৩ দিন ধরে পঞ্চগড় দিনভর কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হিমালয়ের হিমেল বাতাস সরাসরি প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রা কমেছে। বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। দিনের তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। সকাল থেকে র্সূয উঠলেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করায় ঠান্ডা বেড়েছে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে এখানে তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে যাবে।

শীতের কারণে অসহায় ছিন্নমূল দরিদ্র মানুষের কাজকর্ম কমেছে। আয় কমে যাওয়ায় পরিবারগুলোতে দুর্ভোগ বেড়েছে। অসচ্ছল দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, চাশ্রমিক, পাথর শ্রমিকসহ জেলার লাখ লাখ শ্রমিক ও তাদের পরিবারের লোকজন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কাজকর্ম করতে না পেরে এবং গরম কাপড়ের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

শহরের অটোচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, সকালে ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাসে গাড়ি চালানো যায় না। রাস্তাঘাটে যাত্রীও তেমন পাওয়া যায় না। ফলে আয় রোজগার কমেছে। শীত আসলে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

দিনমজুর লুৎফর মিয়া বলেন, শীতের সময় কাজ পাই না। কাজ না পেলে সংসার চালানো কষ্ট হয়। আয় না হলে তো খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়।

চা-শ্রমিক আলেয়া খাতুন জানান, সকালবেলা ঘনকুয়াশায় চা-গাছ ভিজে যায়। সকাল সকাল পাতা তুলতে খুব কষ্ট হয়। ঠান্ডা লাগে। হাত–পা অবশ হয়ে যায়।

পঞ্চগড় এলাকার জিপু ইসলাম জানান, হঠাৎ করেই তাপমাত্রা নিচে নেমে এসেছে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার পাশাপাশি বাতাস বয়ে যাচ্ছে।

দিনমজুর সোহরাব আলী জানান, কুয়াশা আর বাতাসের কারণে আয় রোজগার কমে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে টানাপোড়নের মধ্যে রয়েছি।

তেতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, কুয়াশা কেটে গিয়ে হিমালয়ের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নিচে নেমেছে। তবে রাত থেকে শুরু করে সকাল ৮টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ছিল। কুয়াশা বেশি থাকলে বা ঘন থাকলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আর কুয়াশা কেটে গিয়ে বাতাস প্রবাহিত শুরু হলে তাপমাত্রা নিচে নেমে যায়। শুক্রবার আবহাওয়া একই অবস্থা বিরাজ করছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অসহায় দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ পাথর শ্রমিক, চা-শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা

এদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা। উত্তর থেকে বয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে তৃতীয় দফায় জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈতপ্রবাহ।

বাংলাদেশে শৈত্যপ্রবাহ
বাংলাদেশে শৈত্যপ্রবাহ

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।

হাড় কাঁপানো শীত ও উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কষ্টে আছে শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষেরা।

এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, তাপমাত্রা আরও নিচের দিকে নেমে যেতে পারে। এ ছাড়া, তাপমাত্রা আগামী কয়েক দিন এই রকমই থাকবে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গায় ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি এ যাবতকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

XS
SM
MD
LG