ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে, গাজায় রাফার কাছে একটি ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ থেকে হামাসের নিকট জিম্মি থাকা হামজা জিয়াদনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হামজা জিয়াদন হামাসের হাতে জিম্মি থাকা আরেক ব্যক্তি ইউসুফ জিয়াদনের পুত্র। ইউসুফ জিয়াদনের মৃতদেহ হামজা জিয়াদনের পাশে পাওয়া গেছে।
ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধার হাতে জিম্মি ইসরায়েলি বেদুইন হামজার পরিবারকে তার মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। শুক্রবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ কথা জানায়।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে তারা জানায়, জিম্মি দুজনের মৃতদেহ ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হামাস বা অন্য কোনো ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠীর সশস্ত্র রক্ষীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা আরো জানায়, হামজার মৃত্যু বেশ আগেই হয়েছে এবং তাদেরকে ঠিক কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের আগে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের নতুন প্রচেষ্টা চলাকালীন তাদের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলো।
বেশিরভাগ জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন দ্য হস্টেজ এন্ড মিসিং ফ্যামিলি ফোরাম, হামাসের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইসরায়েলি সরকারের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ইউসুফ এবং হামজাকে আগের চুক্তির মাধ্যমে বাঁচানো যেত।
দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এক বছর ধরে আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। হামাস বলেছে, ইসরায়েল যদি যুদ্ধ শেষ করতে এবং গাজা থেকে তাদের সকল সেনা প্রত্যাহার করতে রাজি হয় তবেই কেবল তারা ইসরায়েলের অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে। ওদিকে ইসরায়েল বলছে, হামাসের পতন না হওয়া পর্যন্ত এবং সকল জিম্মি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
১৫ মাস আগে হামাস যোদ্ধারা গাজা সীমান্তে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী ১২০০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করার পর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানায়, তখন থেকে গাজায় ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো জানায়, এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ যারা একাধিক বার বাস্তচ্যুত হয়েছে তারা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের কারণে খাদ্য ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।