প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার বলেছেন, দুর্নীতিই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে সবচেয়ে বড় হুমকি। তিনি স্পষ্ট সতর্কবার্তায় জানিয়েছেন, চীনা সমাজের অনেক স্তরে বর্তমানে প্রবেশ করা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাকে মোকাবিলা করতে শাসক দল অঙ্গীকারবদ্ধ।
উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে গত বছর চীনে আলোড়ন উঠেছিল; এই ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর থেকে সে দেশের বৃহত্তম তেল ও গ্যাস সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান।
এই তালিকায় আরও ছিলেন চীনের শীর্ষ অ্যাডমিরাল মিয়াও হুয়া। বেইজিং যখন তাদের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের চেষ্টা করছে ও তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতিকে জোরদার করছে, সেই সময় হুয়ার কেলেঙ্কারি সামনে আসে।
চীনের শীর্ষ দুর্নীতি-বিরোধী নজরদারি সংস্থা সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন বা সিসিডিআইয়ের তিন দিন-ব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনীতে শি বলেছেন, চীনে দুর্নীতি যে শুধু ছড়িয়ে পড়ছে, তা নয়, বরং এটি আসলে বাড়ছে।
তিনি সতর্ক করেছেন, “দুর্নীতিই আমাদের দলের কাছে সবচেয়ে বড় হুমকি।”
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিশানা
এই সমস্যার মাত্রা বোঝাতে গিয়ে সিসিডিআই সাম্প্রতিক কয়েক দিনে বলেছে, গত বছর রেকর্ড ৫৮ জন “টাইগার” বা সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছে।
যাদের তদন্ত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪৭ জন উপ-মন্ত্রণালয় বা তার উপরের স্তরে ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন সাবেক কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রী টাং রেনিজান এবং ক্রীড়া বিষয়ক সাধারণ প্রশাসনের সাবেক প্রধান গৌ ঝংগোয়েন।
ওয়াং ওয়াইলিনের মতো সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। তিনি অবসরের বয়সে পৌঁছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পের চেয়ারম্যান পদ থেকে ২০২০ সালে সরে দাঁড়ান।
জর্জিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ওয়েডম্যান বলেছেন, এই ধরপাকড় অব্যাহত থাকবে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)ও ২০২৩ সাল থেকে শুদ্ধিকরণের ঢেউয়ে প্রভাবিত হয়েছে। লি শংফুকে সাত মাস পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং তার পূর্বসূরি ওয়েই ফেংহেকে “শৃঙ্খলার গুরুতর লঙ্ঘনের” জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়; ‘দুর্নীতি’র পরিবর্তে এই লঘু শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে।
চীন স্বীকার করছে, তাদের দুর্নীতি মোকাবিলার প্রচেষ্টা নতুন বাধার মুখোমুখি হচ্ছে; দুর্নীতির প্রচলিত ধরন যেমন নগদ ঘুষ নেওয়া ইত্যাদি আরও জটিল করে তুলছে পরিস্থিতিকে।