শনিবার ভোরে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। এদিকে, কাতারে যুদ্ধবিরতি আলোচনা নতুন করে শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে।
একটি ছোট ছেলে তার বাবার জন্য কাঁদছিল, এবং একজন নারী সাদা প্লাস্টিকের মধ্যে মোড়ানো দেহগুলির মধ্যে একটি জড়িয়ে ধরে শোকে বিহ্বল হয়ে ছিলেন। নাসের হাসপাতালের কর্মীদের মতে, খান ইউনিস শহরে তিনটি বিমান হামলা একটি গাড়ি, একটি বাড়ি এবং রাস্তায় থাকা মানুষের উপর আঘাত হানে।
আর হামাস পরিচালিত সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট জরুরি উদ্ধারকর্মী দল, বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল জানায়, গাজা শহরের সারায়া কমপ্লেক্সের পিছনে একটি আবাসিক এলাকায় বিমান হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হামলায় অন্তত ৫৯ জন নিহত এবং ২৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
কাতারের রাজধানী দোহাতে প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে একটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। শুক্রবার হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী বলে, আলোচনা আবার শুরু হয়েছে এবং তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেয় যেহেতু তা জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে।
হামাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় আরও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করায় যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় আলোচনা বারবার স্থবির হয়ে পড়েছে। হামাসের যোদ্ধারা গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি বের করে আনার পক্ষে এবং তারা ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া অঞ্চলগুলিতে পুনরায় সংগঠন অব্যাহত রেখেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৪৫,৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের গণনায় বেসামরিক এবং যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করে না। মন্ত্রণালয়টি বলে, অগণিত মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নীচে বা এমন জায়গায় রয়েছে যেখানে জরুরি উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারে না।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলে, তারা শুধুমাত্র বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে আঘাত হানে এবং হামাসকে বেসামরিক মৃত্যুর জন্য দায়ী করে কারণ তাদের যোদ্ধারা ঘন আবাসিক এলাকায় কার্য পরিচালনা করে। সেনাবাহিনী বলছে যে তারা ১৭,০০০ জঙ্গিহত্যা করেছে, তবে তারা প্রমাণ ছাড়াই এ দাবি করে।