সত্তর ও আশির দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান (৫৯) মারা গেছেন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগার। অভিনেতা জায়েদ খানসহ অন্য চলচ্চিত্র শিল্পীরাও নিজেদের সামাজিকমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর দিয়েছেন।
ঢাকার সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার বলছে, শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মরদেহ এফডিসিতে আনা হয়, প্রথম জানাজা শেষে দুপুর ২টায় নেওয়া হয় চ্যানেল আইতে।
সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয় বাংলাদেশের অন্যতম এই অভিনেত্রীকে, যিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সুন্দর সময়ের অন্যতম শিল্পী ছিলেন।
মৃত্যুর আগে দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন সত্তর ও আশির দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
গেল ২৪ ডিসেম্বর শরীরে জ্বর নিয়ে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
পরে চিকিৎসকরা জানতে পারেন যে তার রক্তে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, যা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তার হার্ট ও কিডনিতে সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়াও তার ফুসফুসে পানি জমে যায়, তিনি একবার স্ট্রোকও করেন।
‘পরিণীতা’ ও ‘গাংচিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই নায়িকা এক সময় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ছিলেন অতি পরিচিত মুখ।
ঢাকায় এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে অঞ্জনার জন্ম। শৈশব থেকে নাচের প্রতি তার আগ্রহের কারণে বাবা-মা তাকে নাচ শিখতে ভারতে পাঠান।
সেখানে তিনি ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের কাছে নাচের তালিম নেন, শেখেন কত্থক।
সিনেমায় আসার আগেই অঞ্জনা পরিচিতি পান নৃত্যশিল্পী হিসেবে। ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি ঢাকাই সিনেমায় কাজ শুরু করলেও তার মুক্তি পাওয়া প্রথম চলচ্চিত্র ছিল শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’।
নায়ক সোহেল রানার বিপরীতে ওই সিনেমার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি অঞ্জনাকে।
নিজের সেরা সময়ে ঢাকাই সিনেমার প্রথম সারির প্রায় সব নায়কের বিপরীতেই অভিনয় করেছেন তিনি।