দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল তৃতীয় দিনের মতো গ্রেফতারের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার তার বাসভবনে অবস্থান করেছেন। কর্তৃপক্ষ তাঁকে সামরিক আইন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, কিন্তু তিনি “লড়াই” করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ৩ ডিসেম্বর এই নেতা সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন যার ফলে তাঁর অভিশংসন হয়। তিনি এখন গ্রেফতার, কারাদণ্ড বা এর চেয়েও খারাপ পরিণতি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি।
এরপর থেকে ইয়ুনের সমর্থক ও বিরোধীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে শিবির স্থাপন করেছে। অন্যদিকে তার নিরাপত্তা দলের সদস্যরা নাটকীয়ভাবে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে গ্রেফতার অভিযানের প্রচেষ্টা আটকে দিয়েছে।
গ্রেফতারি পরোয়ানার মেয়াদ ৬ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে ইয়ুন আত্মগোপন করেন এবং কোন অনুতাপ ছাড়াই তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বানী দিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক শক্তি দেশটির সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর তৎপরতার কারণে কোরিয়া বর্তমানে বিপদে রয়েছে।” তাঁর আইনজীবী ইয়ুন কাব-কেউন এএফপি'কে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুর্নীতি তদন্ত অফিসের (সিআইও) প্রধান ওহ ডং-উন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কেউ কর্তৃপক্ষকে ইউন সুক ইওলকে গ্রেফতারের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে।
সিআইও’র এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, সমনের পাশাপাশি সোলের একটি আদালত তার সরকারি বাসভবন ও অন্যান্য স্থানে তল্লাশি পরোয়ানা জারি করেছে।
প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিসে আনুষ্ঠানিক অবস্থান হচ্ছে পরোয়ানাগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিবেচনা করা।
ইয়ুন সুক ইওল বলেন, সামরিক আইন আদেশটির উদ্দেশ্য ছিল "রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি" নির্মূল করা, কিন্তু সেই আদেশ মাত্র কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল।
সশস্ত্র সেনারা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভবনের ঢুকে কাঁটাতারের বেড়া টপকায়, জানালা ভেঙে ফেলে এবং হেলিকপ্টারে করে অবতরণ করে, কিন্তু আইন প্রণেতারা পার্লামেন্টে সামরিক আইন নাকচ করে ভোট দেয়ার পর প্রেসিডেন্ট দ্রুত পিছিয়ে যেতে বাধ্য হন।
এরপর পার্লামেন্ট তাকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় এবং এখন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।