হোয়াইট হাউস শুক্রবার জানিয়েছে যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রশিয়ার যুদ্ধে সীমান্ত বরাবর উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ব্যাপক হতাহতের মুখোমুখি হয়েছে। গত সপ্তাহে একমাত্র রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলেই তাদের এক হাজারের মতো সৈন্য হতাহত হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিউনিকেশান অ্যাডভাইজার জন কার্বি সংবাদদাতাদের বলেন, “এটা পরিস্কার যে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক নেতারা তাদের সৈন্যদের খরচের খাতায় ধরে নিয়েই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যুহের বিরুদ্ধে অনর্থক আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দিচ্ছেন”।
কার্বি আরও বলেন সামনের দিনগুলিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের নিরাপত্তা সহযোগিতা হিসেবে আরেকটি থোক সহায়তা অনুমোদন করতে পারেন।
ইতোমধ্যেই শুক্রবার স্লোভাকিয়া, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ সমাপ্তির লক্ষ্যে শান্তি আলোচনা আয়োজনে তাদের প্রস্তুতির কথা নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন যে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা আয়োজনে স্লোভাক প্রস্তাবের ব্যাপারে রাশিয়ার কোন আপত্তি নেই।
ফেইসবুকে স্লোভাক পররাষ্ট্র মন্ত্রী জুরাজ ব্ল্যানার লেখেন,“এ রকম আপোষ আলোচনার জন্য আমরা স্লোভাক ভূমি ব্যবহারের প্রস্তাব দিচ্ছি”।
ব্ল্যানার আরও বলেন যে কোন আলোচনায় রাশিয়াসহ সকল পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে হবে। এর আগে জুন মাসে সুইজারল্যান্ডের আলোচনায় রুশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন না।
ব্ল্যানার বলেন,“আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিবৃতিকে যথা শিগগির সম্ভব এই ধ্বংসযজ্ঞ, এই রক্তক্ষয়, এই যুদ্ধ বন্ধের একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখছি”।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন স্লোভাকিয়া অক্টোবর মাসে ইউক্রেনকে জানিয়েছে যে তারা এই শান্তি আলোচনা আয়োজনে প্রস্তুত। স্লোভাকিয়া হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নেটোর সদস্য।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো হচ্ছেন মুষ্টিমেয় ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে একজন যিনি মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। ২২ ডিসেম্বর মস্কোতে তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করায় ইউক্রেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।
ফিকো ইউক্রেনকে স্লোভাকিয়ার সামরিক সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দেন এবং রাশিয়ার গ্যাস স্লোভাকিয়ায় সরবরাহের ব্যাপারে হুমকি প্রদানের জন্য তিনি ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেন।
এ দিকে শুক্রবারই ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায় যে রাতে নিক্ষিপ্ত রাশিয়ার ২৪টি ড্রোনের মধ্যে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১৩টিকে ভূপাতিত করেছে। বিমান বাহিনী বলে যে অবশিষ্ট ১১ টি রুশ ড্রোন কোন রকম ক্ষতি না করেই “ হারিয়ে” যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রের হালনাগাদ অবস্থা জানতে এবং যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন প্রদানের বিষয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঁদ্রি সিবিহার সঙ্গে কথা বলেছেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন,“ইউক্রেনের স্বাধীনতা রক্ষায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেনের জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবিচল সমর্থনের কথা আবার ব্যক্ত করেছেন”।
এই বক্তব্য এমন এক সময় আসলো যখন শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় যে তাদের বাহিনী ইউক্রেনের দুটি পূ্র্বঞ্চলীয় গ্রামের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এই দু’টি গ্রাম হচ্ছে ডনেটস্ক অঞ্চলের ইভানিভকা এবং খারকিভ অঞ্চলের ঝারিজোভ।
ভয়েস অফ আমেরিকা রাশিয়ার এই প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এসেছে এএফপি ও রয়টার্স থেকে।