অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইমরান খানের ৬০ সমর্থককে পাকিস্তানের সামরিক আদালতের শাস্তি প্রদান


ফাইল- পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ''এর সমর্থক,যারা তাঁর মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে ঝটিকা আক্রমণ চালায় তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালানোর পর পাকিস্তানি রেঞ্জাররা একটি এলাকা পাহারা দিচ্ছে। ইসলামাবাদ, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪।
ফাইল- পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ''এর সমর্থক,যারা তাঁর মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে ঝটিকা আক্রমণ চালায় তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালানোর পর পাকিস্তানি রেঞ্জাররা একটি এলাকা পাহারা দিচ্ছে। ইসলামাবাদ, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ৬০ জন সমর্থককে সেনা স্থাপনাগুলিতে আক্রমণ চালানোর অভিযোগে দুই থেকে দশ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা জানিয়েছে দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে রয়েছেন ৭২ বছর বয়সী এই নেতার এক ভাগ্নে এবং দু জন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকেই ইমরান খান কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং দূর্নীতি, উস্কানি প্রদান ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকজনকে ক্ষেপিয়ে তোলাসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি।

সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্রের অলংঘনীয় আইন যাতে রক্ষা করা যায় সেটি নিশ্চিত করতে দেশ, সরকা্র ও সেনাবাহিনী তাদের অঙ্গীকারে অবিচলিত রয়েছে”।

এই শাস্তি প্রদানের এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে একই অভিযোগে সামরিক আদালত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ বা পিটিআই দলের ২৫ জন সদস্যকে শাস্তি দেয়। খানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের পটভূমি হচ্ছে ২০২৩ সালের মে মাসে তাদের দেশব্যাপী প্রতিবাদ । সেই সময়ে বিক্ষোভকারীরা নজিরবিহীন ভাবে পাকিস্তানের এই শক্তিধর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনরোষ প্রদর্শন করে যখন তারা অনেকগুলি সামরিক স্থাপনায় জোর করে প্রবেশ করে সেগুলো তছনছ করে দেয়।

পিটিআই “গোপনীয়” ভাবে এই সামরিক বিচারকে প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। ইমরান খান ও তাঁর সহযোগীরা কোন রকম অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে বলেন গোয়েন্দারা পিটিআই’য়ের

“শান্তিবাদি” বিক্ষোভকারীদের ভেতরে গোপনে প্রবেশ করে বিরোধী দলের উপর রাষ্ট্রীয় অভিযান চালানোকে যৌক্তিকতা দিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ২৫ জন পিটিআই সদস্যকে ১০ বছরের জন্য যে “সশ্রম কারাদন্ড” দেয়া হয় সে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে জোর দিয়ে বলেছে তাদের দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাজুয্য রেখে ন্যায় বিচারের অধিকারকে যেন তারা মর্যাদা দেয়।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে,“পাকিস্তানি অসামরিক নাগরিকদের সামরিক ট্রাইবুনালের শাস্তি প্রদান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এই সামরিক আদালতগুলির বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং যথার্থ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা নেই”।

অসামরিক লোকজনের সামরিক আদালতে বিচার করার সমালোচনা করে ব্রিটেনও বলেছে,

তাদের, “স্বচ্ছতা, স্বাধীন ভাবে যাচাই” করতে পারে না “এবং ন্যায় বিচারের অধিকারকে” খর্ব করে। পাকিস্তানি অসামরিক লোকজনের সামরিক আদালতে বিচারের সমালোচনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে,“ অসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি যার প্রতি পাকিস্তান দায়বদ্ধ তার সঙ্গে অসামঞ্জস্যমূলক” বলে অভিহিত করে।

পাকিস্তানি সরকার সামরিক বিচার ও তার ফলে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টিকে এই বলে সমর্থন করেছে যে তাতে ন্যায্য বিচারের অধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়েছে এবং সামরিক ট্রাইবুনাল ও বেসামরিক আদালতগুলির কাছে আপিল করারও বিধান রয়েছে।

XS
SM
MD
LG