আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অঞ্চলে রাতভর বিমানের মাধ্যমে বোমা হামলায় অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানান তালিবান কর্মকর্তারা।
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আফগান সীমান্তবর্তী পাকতিকা প্রদেশের প্রত্যন্ত পার্বত্য জেলা বারমালের চারটি স্থান লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে মুজাহিদ বলেন, ”নিহতের মোট সংখ্যা ৪৬, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।” মুজাহিদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে আরও বলেন যে আরও ৬ জন অসামরিক লোক আহত হয়। কথিত হতাহতের বিষয়ে তার দাবির সত্যতা স্বাধীন সূত্র থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।
বুধবার তালিবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে, তারা বারমালে “ পাকিস্তানের সামরিক বিমান দ্বারা পরিচালিত বিমান হামলার বিষয়ে কঠোর প্রতিবাদ নোট” দেয়ার জন্য কাবুলে ভারপ্রাপ্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক এবং এর অনিবার্য পাল্টা পরিণতি হবে।” এতে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে পাকিস্তান কোন মন্তব্য না করলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, দেশটি বারমালে জঙ্গিবিরোধী নির্দিষ্ট বিমান হামলা চালিয়েছে।
গণমাধ্যমের সাথে প্রকাশ্যে যোগাযোগের অনুমতি না পাওয়া ওই কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আফগান জেলার একাধিক স্থানকে লক্ষ্য করে সামরিক অভিযান চালানো হয়।
আফগান জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ এবং আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে পাকিস্তানের ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে নিন্দা জানায়। এতে বলা হয়, বারমালে বসবাসকারী আফগান নাগরিক এবং পাকিস্তানের শরণার্থী পরিবার উভয়ই হামলার শিকার হয়েছে।
ভারী অস্ত্রে সজ্জিত টিটিপি জঙ্গিরা বারমালের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের একটি জেলা দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর উপর সবচেয়ে মারাত্মক বিদ্রোহী হামলায় ১৬ জন সেনাকে হত্যা করার দুদিন পর এই বিমান হামলা চালানো হলো।