সিরিয়ার নতুন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার জন্য এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর সেখানে আটক আমেরিকান সাংবাদিক অস্টিন টাইসের অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে যুক্তরাষ্ট্রের একদল কূটনীতিক শুক্রবার সিরিয়ায় গেছেন ।
নিকট পূর্বাঞ্চল বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্রম্ন্ত্রী বারবারা লীফ, সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত ড্যানিয়েল রুবিন্সটেইন ও পণ-বন্দি সম্পর্কে আলোচনার জন্য বাইডেন প্রশাসনের বিশেষ দূত রজার কারস্টেনস সিরিয়ার অন্তর্বর্তী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছেন বলে শুক্রবার ভোরে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে ।
পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, “ তাঁরা আশা করছেন অস্টিন টাইস, মাজদ কামালমাজ এবং আসাদ আমলে নিখোঁজ অন্যান্য আমেরিকান নাগরিকদের ভাগ্যে কি ঘটেছে, সে সম্পর্কে তথ্য উন্মোচন করতে পারবেন”।
টেক্সাসের বাশিন্দা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক নৌসেনা থেকে যিনি সাংবাদিক হলেন সেই টাইস ২০১২ সাল থেকে সিরিয়ায় বন্দি রয়েছেন। তাঁকে দামেস্কের একটি তল্লাশি চৌকিতে আটক করা হয়। তাঁর আটকের পর একটি ছোট্ট ভিডিও ছাড়া তখন থেকে তার সম্পর্কে আর কিছু দেখা কিংবা শোনা যায়নি।
বিদেশে দীর্ঘতম সময় ধরে আট আমেরিান সাংবাদিক টাইস , দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, সিবিএস ও ম্যাকক্লাচি সহ অন্যান্য মিডিয়াতে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেন।
সিরীয়-আমেরিকান মনস্তত্ত্ববিদ কামালমাজ, যিনি ওই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির শরণার্থীদের চিকিত্সা করতেন, তাঁকে ২০১৭ সালে সরকারের এটি তল্লাশি চৌকিতে থামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি তাঁর একজন বয়স্ক আত্মীয়কে দেখতে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন । ২০২৪ সালের মে মাসে যুতরাষ্ট্র জানতে পারে যে বন্দি অবস্থায় তিনি মারা যান।
জুন মাসে দেওয়া এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, “ মাজদ এর যা হয়েছিল সে জন্য সিরীয় সরকারকে জবাব দিতে হবে”।
তাঁর পরিবার তাঁর সন্দেহজনক মৃত্যু ও অন্যায় কারাদন্ডের জন্য সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে ামলা জারি করে।
এই মাসে আসাদ সরকারের পতন টাইসের পরিবারে এ ধরণের সতর্ক আশাবাদের জন্ম দিয়েছে যে তিনি সেই হাজার হাজার বন্দির মধ্যে একজন হতে পারেন যাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
টাইসের মা ডেব্রা গত সপ্তাহে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ দামেস্কে যারা আসছেন তারা কারাগারগুলি উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন, আমরা আশা করছি যে আল্লাহর মর্জিতে তারা সেটাও খুলে দেবেন যেখানে অস্টিন বন্দি আছে”।
টাইসের পরিবার এই মাসে বলেছে যা তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বারা সত্যায়িত বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছে যাতে নিশ্চিত করা হয়েছে যে টাইস জীবিত আছেন এবং তাঁকে দামেস্কে আটক রাখা হয়েছে। সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে টািইসের খোঁজ এখনও চলছে।
গত এক দশকের মধ্যে শুক্রবারের এই সফরটি হচেছ সিরিয়ায় আমেরিকান কূটনীতকদের প্রথম সফর । ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কে তাদের দূতাাস বন্ধ করে দেয়।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, “ তাঁরা সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ, সক্রিয়বাদি, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্যবৃন্দসহ সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হবেন যাত করে তাঁদের দেশের ভবিষ্যত্ সম্পর্কে তাঁদের চিন্তাধারা জানা যায় এবং তাদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র কি ভাবে সাহায্য করতে পারে সেটিও বোঝা যায়”।