গত ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার- আল আসাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সরকার। শনিবার তাদের বিপুল অগ্রযাত্রা দমনে সরকারি বাহিনীগুলো যুদ্ধরেখা বরাবর তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করে এবং হোমস’এর চারপাশে বিদ্রোহীদের অবস্থানের উপর বোমা বর্ষণ করে।
এক সপ্তাহ আগেই বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখল করে নেওয়ার পর, গোটা দেশ জুড়ে সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্রুতই ভেঙ্গে পড়ে এবং যেখানে মনে করা হতো বিদ্রোহীদের দিন শেষ সে সব শহরবিদ্রোহরা দখল করে নেয়
উত্তরে আলেপ্পোা দখল ছাড়াও বিদ্রোহীরা মধ্যাঞ্চলে হামা এবং পূর্বে দেইর আল-জোর দখল করে নেয়। তা ছাড়াও সুয়েইদার দক্ষিণাঞ্চল ও দেরায়ও তাদের অবস্থান মজবুত করেছে। শুক্রবার তারা সেই দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে বলেও জানায়। তারা সেখানে তাদের জয়ের উল্লাসের ভিডিও পোষ্ট করে।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামা ও হোমসের চারপাশে আরও জোরদার বিমান হামলা চালাচ্ছে। বিদ্রোহীদের দাবি অস্বীকার করে তারা, ডেরা ও সুয়েইদার আশপাশে অবস্থান নেবার কথাও জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আরব দেশগুলো হতবাক হয়েছে। এটি নতুন করে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা তৈরি করেছে। শনিবার কাতার বলেছে, এই ঘটনা সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সে সময় দেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষ শরণার্থী হিসেবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে চলে যায়। তাছাড়া, বিশ্বজুড়ে জিহাদি জঙ্গি হামলার বিভিন্ন সুযোগ অন্যান্য সংগঠনের জন্য তৈরি হয়।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, সিরিয়ার সামরিক বাহিনী একটি কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে। তারা বিদ্রোহীদের সাথে পেরে উঠছে না, পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই আসাদ নির্ভর করেছেন তার মিত্র দেশগুলোর উপর । বিশেষ করে, রাশিয়া যুদ্ধবিমান বিদ্রোহীদের অবস্থানে বোমা বর্ষণ করে , ইরান সিরিয়ার সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরাকি মিলিশিয়া সহ মিত্র বাহিনীকে পাঠায়। কিন্তু রাশিয়া ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর এবং ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর নিজস্ব যুদ্ধে তাদের শক্তি হ্রাস পায়।
শুক্রবার রাশিয়া তার নাগরিকদের সিরিয়া ছেড়ে ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইরানও সিরিয়া থেকে কূটনীতিকদের পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ইরানি কর্মকর্তা।