সিরিয়ার হোমস ও হামা শহরের মধ্যে সংযোগকারী মহাসড়কের একটি সেতু লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা হামা ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র আলেপ্পো দখল করার পর সরকারি বাহিনী হোমসকে সুরক্ষিত করতে হিমশিম খাচ্ছে।
ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলে, “হোমস-হামা মহাসড়কের আল-রাস্তান সেতু লক্ষ্য করে জঙ্গি বিমানগুলো বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে।পাশাপাশি সেতুর চারপাশে অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে, হামা ও হোমসের মধ্যবর্তী রাস্তা কেটে হোমসকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।”
ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে তাদের আক্রমণ শুরু করে। ওই সময় প্রতিবেশী লেবাননে ইসরায়েল এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্র হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধে বিরতি জারি করা হয়েছিল।
এর আগে অবজারভেটরি জানায়, বিদ্রোহীরা তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবে এই আশঙ্কায় আসাদের সংখ্যালঘু আলাউয়ি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার সদস্য বৃহস্পতিবার হোমস ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
সরকারি বাহিনীর সাথে রাস্তায় লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীরা হামা দখল করে এবং তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বার্তায় ‘শহরটি সম্পূর্ণ মুক্ত’ করার ঘোষণা দেয়।
সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনাল থিংক ট্যাংকের ফেলো অ্যারন লান্ড হামার দখলকে “সিরিয়া সরকারের জন্য একটি ব্যাপক, বিশাল আঘাত”বলে অভিহিত করেছেন। বিদ্রোহীদের বিজয় উলটে দিতে সেনাবাহিনীর সেখানে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা উচিত ছিল, “কিন্তু তা হয়নি”।
অবজারভেটরির পরিচালক রামি আবদেল রাহমান জানান, আসাদের শহর থেকে আসাদের সংখ্যালঘু আলাউয়ি সম্প্রদায়ের সদস্যরা গণহারে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে শিয়া ইসলামের একটি শাখার অনুসারী আলাউয়িরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
সিরিয়ার বিভিন্ন সূত্রের পর নির্ভরশীল অবজারভেটরি জানায়, গত সপ্তাহে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে ৮২৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই যোদ্ধা। এদের মধ্যে ১১১ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
২০১১ সালে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের দমন-পীড়নের ফলে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধে ২০২০ সালের পর এটিই সবচেয়ে তীব্র লড়াই।