দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়ুলকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেবার বিষয়ে ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির প্রধান তার সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন। রক্ষণশীল নেতা ও সহকর্মীকে বরখাস্ত করতে তার এই পদক্ষেপ আকস্মিক ও শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক আইন ঘিরে ইয়ুনের ব্যর্থ প্রচেষ্টাকে ঘিরে তার অভিশংসনের সম্ভাবনা এতে অনেকটাই বেড়ে গেল।
শুক্রবার দলীয় বৈঠকে পিপিপি নেতা হান ডং হুন “নতুন প্রকাশিত তথ্যে”র বিষয়ে উল্লেখ করে ইয়ুনকে কর্তব্য থেকে “দ্রুত অব্যাহতি” দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই নতুন তথ্যে উঠে এসেছে, বিশিষ্ট আইনপ্রণেতাদের “রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি” বলে অভিযুক্ত করে তাদের গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা বিভাগকে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন ইয়ুন।
দক্ষিণ কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ব্যবহার করে হান বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ইয়ুন স্বীকার করেননি যে বেআইনি সামরিক আইন জারি একটা ভুল ছিল। প্রেসিডেন্ট ইয়ুন যদি তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন তাহলে এমন চরম পদক্ষেপ ফিরিয়ে আনার মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে…যা রিপাবলিক অফ কোরিয়া ও তার জনগণকে বিশাল হুমকির মুখে ফেলতে পারে।”
ইয়ুন কয়েক মাস ধরে হতাশ কেননা তার কথায়, বিরোধীরা তার শাসনকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি মঙ্গলবার বিকালে সামরিক আইন জারি করে দাবি করেছিলেন, “রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে দমন” ও “সাংবিধানিক শৃঙ্খলা রক্ষা” করতে এটা প্রয়োজন ছিল।
জাতীয় পরিষদ ভবনে পাঠানো পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লড়াই চালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই ডিক্রিকে বাতিল করে দেন।
জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধীরা শনিবার বিকালে ইয়ুনের অভিশংসন নিয়ে ভোটের পরিকল্পনা করছেন।
এই জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম শুক্রবার জানিয়েছে, গুজব (যা যাচাই করা যায়নি) ছড়িয়ে পড়েছে যে, দ্বিতীয় বার সামরিক আইন প্রয়োগের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যদিও এই প্রতিবেদনগুলি দ্রুত অস্বীকার করেছে সামরিক বাহিনী।
ইউটিউবে লাইভ-স্ট্রিমড সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ যুদ্ধ কমান্ডের প্রধান কোয়াক জং জিউন বলেছেন, যদি এমন নির্দেশিকা পানও তাহলেও তিনি দ্বিতীয় সামরিক আইনি ডিক্রি প্রয়োগ করবেন না।
কোয়াক আরও বলেছেন, প্রথম স্বল্প সময়ের সামরিক আইন চলাকালে এই পদক্ষেপকে বেআইনি বিবেচনা করে তিনি জাতীয় পরিষদ থেকে আইনপ্রণেতাদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ অস্বীকার করেছিলেন।
ইয়নহাপ সংবাদ সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম সামরিক আইন ঘোষণায় যুক্ত কোয়াক ও আরও দুই সিনিয়র সামরিক কমান্ডারকে পরে বরখাস্ত করে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সে দেশের আইনসভায় শুক্রবার উত্তেজনা তাৎক্ষণিকভাবে তুঙ্গে উঠেছিল; গুজব ছিল যে, অভিশংসন যাতে না হয় তার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা হিসেবে ইয়ুন সেখানে এসে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চলেছেন।