বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক সের্গেই ল্যাভরভকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিহিত করেন। তারা উভয়েই মাল্টায় একটি আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর ইইউ সদস্যরাষ্ট্রে ল্যাভরভের এটাই প্রথম সফর।
অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই ‘র বৈঠকে একটি বিশাল টেবিলে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বসেছিলেন তখন ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি সিবিগা ও মস্কোকে ‘আমাদের সাধারণ নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি’ বলে অভিযুক্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনও আলোচনার জন্য ভালেটার নিকটবর্তী তা’কালিতে ছিলেন। তবে কর্মকর্তারা বলেন, ল্যাভরভের সাথে তার সাক্ষাতের কোন পরিকল্পনা নেই।
৫৭ সদস্যের এই সংস্থার মন্ত্রীদের সিবিগা বলেন, “রাশিয়া অংশীদার নয়, তারা আমাদের অভিন্ন নিরাপত্তার জন্য সর্ববৃহৎ হুমকি।”
‘অস্থিতিশীলতা’
রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে স্টকহোম সফরের পর থেকে ল্যাভরভ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ সফর করেননি। সে বারও তিনি ওএসসিই’র ভেঠকের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
সান মারিনো এবং রোমানিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে বসে তিনি ইইউ, নেটো এবং বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আরআইএ নাভোস্তির মন্তব্যের প্রতিলিপি অনুসারে, তিনি বলেন, পশ্চিমারা “স্নায়ুযুদ্ধে পুনর্জন্মের পেছনে ছিল, কেবল এখন এটির উত্তপ্ত যুদ্ধে রূপান্তরের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।”
তিনি ওয়াশিংটনকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালানোর জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, ওয়াশিংটন এর মাধ্যমে “পুরো ইউরেশীয় মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়।”
স্নায়ুযুদ্ধের সময় পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য ১৯৭৫ সালে ওএসসিই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এখন ব্রিটেন ও কানাডার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ তুরস্ক থেকে মঙ্গোলিয়া পর্যন্ত ৫৭টি সদস্য-রাষ্ট্র রয়েছে।
এই জোট তার সদস্যদের মানবাধিকার এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলোতে সমন্বয় করতে সহায়তা করে, তবে এক বছর আগে উত্তর মেসিডোনিয়ার গত মন্ত্রী পর্যায়ের শীর্ষ সম্মেলনে ল্যাভরভ ওএসসিকে নেটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে “সংযোজিত” হওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন।
ইউক্রেন রাশিয়াকে সংগঠন থেকে বাদ দেয়ার আহ্বান জানায় এবং ল্যাভরভের উপস্থিতির কারণে স্কোপিয়ে শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করে।
শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ান বর্গ ইউক্রেন থেকে রাশিয়াকে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার কার্যক্রম শুরু করেন।
ব্লিংকেনও ল্যাভরভকে অভিযুক্ত করেন। ল্যাভরভ সেই সময়ে ওই কক্ষে ছিলেন না।ব্লিংকেন ল্যাভরভকে “ভুল তথ্যের সুনামি” ছড়ানোর জন্য এবং ইউক্রেনের উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য মস্কোকে দোষারোপ করেন।
কিয়েভের নাজুক সময়ে আরও অনেক অংশগ্রহণকারী মস্কোর আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ অবসানের জন্য দ্রুত চুক্তির জন্য চাপ দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এটি কিয়েভকে জানুয়ারিতে ট্রাম্পের অভিষেকের আগে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে সুরক্ষার নিশ্চয়তা গ্যারান্টি এবং মূল অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের জন্য অস্থির করে তুলেছে।