সুদানের গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা আগের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। নতুন এক গবেষণায় এটি প্রকাশিত হয়। ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই সংঘাত বিশ্বে সর্বোনিকৃষ্ট ক্ষুধা সংকট তৈরি করেছে; লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষণায় দেখা গেছে, খার্তুম রাজ্যেই মৃত্যুর সংখ্যা পুরো দেশে পূর্বে যে মৃত্যুর সংখ্যা অনুমান করা হয়েছিল তার চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “গবেষকদের অনুমান, খার্তুম রাজ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থা থেকে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও অনুমান করা হয়, একই সময়কালে খার্তুম রাজ্যে সহিংসতার কারণে ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, যা পুরো দেশের জন্য এসিএলইডি দ্বারা রিপোর্ট করা ২০ হাজার ১৭৮ ইচ্ছাকৃত-আঘাতে মৃত্যুর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।”
এসিএলইডি বা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট ডেটা একটি অলাভজনক সংস্থা। এদের পরিসংখ্যানগুলো জাতিসংঘ এবং জাতীয় সরকারসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্বারা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং অনাহার। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সুদানে দেশব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা পূর্ববর্তী অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি, কারণ “খার্তুম রাজ্যে মৃত্যুর ৯০ শতাংশের বেশি রেকর্ড করা হয়নি, যাতে বোঝা যায় যে, অন্যান্য অঞ্চলে মৃত্যুর সংখ্যাও রেকর্ড করা পরিসংখ্যানের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।”
২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের মধ্যে এটি হলো নৃশংস ক্ষমতার লড়াই। এই সংঘাত পুরো সম্প্রদায়কে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে এবং বেশিরভাগ সরকারি পরিষেবা ধ্বংস করে দিয়েছে, যা সংঘাতের কারণে অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যার সঠিক অনুমানে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে।
জাতিসংঘ বলছে, সংঘাতের কারণে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি মানুষের (সুদানের জনসংখ্যার অর্ধেক) খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন, যা একে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্ষুধা সংকটে পরিণত করেছে।