ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে সুমি শহরে রাশিয়ার হামলায় ১১ জন নিহত ও কমপক্ষে ৮৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের কর্মকর্তারা।
সামরিক প্রশাসক ভলোদিমির আরতিখ টেলিগ্রামে পোস্ট করে বলেছেন, “রবিবার সন্ধ্যা সুমি শহরের জন্য নরক হয়ে ওঠে; রাশিয়া আমাদের মাটিতে এই ট্রাজেডি সৃষ্টি করেছে।”
সুমির আঞ্চলিক প্রসিকিউটর বলেছেন, এই হামলায় ৯০টি আবাসন, ২৮টি গাড়ি, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১৩টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সকালের দিকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রাশিয়ার ব্যাপক বোমাবর্ষণের পর এই হামলা চালানো হয়। পাশপাশি নতুন প্রতিবেদনে জানা গেছে, রাশিয়ায় সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনকে ছাড়পত্র দিয়েছে ওয়াশিংটন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেছেন, তার দেশ ও মিত্রদের উচিত “যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার উপর প্রকৃত চাপ” সৃষ্টির দিকে নজর দেওয়া।
জেলেন্সকি তার নৈশ ভাষণে বলেছেন, “গোটা যুদ্ধে অন্যতম বৃহৎ ও সবচেয়ে বিপজ্জনক রুশ হামলা চলেছে আজ—হাইপারসনিক ও এরোব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ ২১০টি ড্রোন ও বহু ক্ষেপণাস্ত্র একযোগে নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
জেলেন্সকি বহুদিন ধরে চেষ্টা করছেন যাতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে ‘আর্মি ট্যাকটিকাল মিসাইল সিস্টেম’ বা এটিএসিএমএস ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া যায়। ভাষণে তিনি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সমঝোতা করা কার্যকরী কৌশল নয়।
এই বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা ও আরও তিন ব্যক্তির বক্তব্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার অনেকটা ভিতরে আঘাত হানতে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে ইউক্রেনকে অনুমোদন দিয়েছেন; দূরপাল্লার অস্ত্রের উপর থেকে ওয়াশিংটন তাদের বিধিনিষেধ নমনীয় করেছে কারণ রাশিয়া তাদের যুদ্ধকে আরও আগ্রাসী ও জোরালো করতে ১২ হাজার পর্যন্ত উত্তর কোরীয় সৈন্য মোতায়েন করেছে। এমনটাই জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সংঘাত যাতে আরও বৃদ্ধি না পায় সে জন্য বাইডেনের বিরোধিতা করা হয়েছে এবং পুতিন বলেছেন, নেটো যদি তাদের মিত্রদের তাদের অস্ত্র রুশ ভূখণ্ডে হামলা করতে ইউক্রেনকে অনুমতি দেয় তাহলে পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে অন্যদের দূরপাল্লার অস্ত্র দিতে পারে মস্কো।
এদিকে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, রাশিয়া রাতের মধ্যে ইউক্রেনের নিক্ষেপ করা ৫৯টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।