ইরানে কয়েক মাস আগে ২৬ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আধা মিনিট পর তা স্থগিত করার পর বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বলে একটি এনজিও জানিয়েছে।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে হত্যার অভিযোগে আহমাদ আলিজাদেহকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অভিযোগ আলিজাদেহ অস্বীকার করেন। তবুও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
গত ২৭ এপ্রিল তেহরানের বাইরে কারাজের গেজেল হেসার কারাগারে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কিন্তু ফাঁসির মাত্র ২৮ সেকেন্ডের মাথায় বাদীর পরিবার ক্ষমার জন্য চিৎকার করে উঠলে তাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনা হয়। তার ‘প্রাণহীন’ মরদেহ সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করা হয় বলে জানায় আইএইচআর।
ইরানের শরিয়া আইন অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর পরিবার অপরাধীর জীবন বাঁচাতে টাকা চাইতে পারে বা ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দণ্ডিত ব্যক্তির পরিবার নির্ধারিত অংকের টাকা দিতে পারে না এবং সেক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানায় অধিকার কর্মীরা।
ব্লাড মানির জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে কোনো চুক্তি না হওয়ায় আলিজাদেহ মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন ।
আইএইচআর জানায়, বুধবার সকালে গেজেল হেসার কারাগারে আবারও তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম বলেন, “মেধাবী ছাত্র আহমাদ আলিজাদেহকে হত্যার অভিযোগে দ্বিতীয়বারের মতো ফাঁসি দেয়া হয়েছে। হত্যার অভিযোগ আলিজাদেহ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন নির্যাতনের মুখে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।”
সক্রিয়কর্মীদের অভিযোগ, বিশেষত ২০২২-২০২৩ সালের দেশব্যাপী বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে ইরান মৃত্যুদণ্ডকে সমাজে ভীতি জাগরুক রাখতে ব্যবহার করছে। ওই বিক্ষোভ ইসলামি কর্তৃপক্ষকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
আইএইচআর অনুসারে, ২০২৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে নতুন করে এই প্রবণতার বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। কেবল অক্টোবরেই কমপক্ষে ১৬৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার রেকর্ড করা হয়েছে। ২০০৭ সালে দলটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা শুরু করার পর থেকে এক মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে।