২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী শাখা বৃহস্পতিবার বলেছে, চীনের অনলাইন খুচরো বিক্রেতা টেমু বেআইনি পণ্য বিক্রি রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, এই সন্দেহে তদন্ত শুরু করেছে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন টেমু-কে “বিশাল বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে”র তালিকাভুক্ত করেছে; এর পাঁচ মাস পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের তদন্ত শুরু করেছে। এই গোষ্ঠীর ডিজিটাল পরিষেবা আইন মোতাবেক এই তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলি নিয়ে কঠোর পর্যায়ের তদন্তের প্রয়োজন হয়। অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে সাফাই করতে ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে বিবিধ বিষয় সম্বলিত এই অনুশাসনমালা তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশাল অঙ্কের জরিমানার হুমকিও রয়েছে।
মাত্র দুই বছর আগে পশ্চিমা বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে টেমু এবং কাপড় থেকে গৃহস্থালির সামগ্রীর মতো পণ্য সস্তায় বিক্রি করে তারা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই পণ্যগুলি চীনের বিক্রেতারা চালান দিয়ে থাকে। চীনের জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট পিনদুয়োদুয়ো ইনকর্পোরেটেডের মালিকানাধীন এই সংস্থার বর্তমানে ৯০ কোটি ২০ লক্ষ ভোক্তা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে।
টেমু বলেছে, তারা “ডিএসএ-র অধীনে তাদের দায়গুলি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে। আমাদের কর্মসূচিকে মজবুত করতে ও আমাদের প্ল্যাটফর্মে ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে আমরা ক্রমাগত বিনিয়োগ করছি।”
এই সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “উপভোক্তাদের জন্য নিরাপদ, বিশ্বস্ত বাজারের যৌথ লক্ষ্য পূরণ করতে আমরা নিয়ামকদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
ইউরোপিয়ান কমিশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারেট ভেস্তাজার এক প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, টেমুর প্ল্যাটফর্মে বিক্রিত পণ্য “ইইউয়ের স্ট্যান্ডার্ড পূরণ করছে কিনা ও ভোক্তাদের কোনও ক্ষতি করছে কিনা” তা নিশ্চিত করতে চায় ব্রাসেলস।
বাতিল করার পর তারা দ্রুত হাজির হতে পারে, এই উদ্বেগের মধ্যে কমিশন তদন্ত করে দেখবে, “দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী”দের “বেঠিক পণ্য” বিক্রি রুখতে টেমুর ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা। এই প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হওয়া কোনও নির্দিষ্ট বেআইনি পণ্যের কথা আলাদা করে বলেনি কমিশন।
টেমুর “আসক্তিজনক কৌশল”এর (যেমন “গেম-এর মতো” পুরস্কারের টোপ) ঝুঁকিও পরীক্ষা করছে নিয়ামকরা। এই ঝুঁকি প্রশমিত করতে সংস্থাটি কী করছে তাও জানতে চায় তারা।
ডিএসএ-র দুটি শর্ত টেমু মানছে কিনা তা নিয়েও তদন্ত চলছে। এই শর্তগুলি হল, গবেষকদের তথ্য লাভের সুযোগ দেওয়া এবং সুপারশিকারী সিস্টেমের ব্যাপারে স্বচ্ছতা।
টেমুর এখন কমিশনকে জবাব দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সংস্থাটি যদি বদল নিয়ে আসে বা প্রমাণ করতে পারে যে, সন্দেহটি অবৈধ তাহলে তাদের উপর জরিমানা চাপানো হবে নাকি মামলাটি বাতিল করা হবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে কমিশন।
টেমু যুক্তরাষ্ট্রেও তদন্ত ও পরীক্ষার মুখে পড়েছে। গত বছর কংগ্রেসের এক প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়, সংস্থাটি তাদের প্ল্যাটফর্মে কাজে বাধ্য করা শ্রমিকদের তৈরি পণ্য রুখতে ব্যর্থ।