যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মতে, রাশিয়ার কাজান শহরে ব্রিকস গোষ্ঠীর বৈঠক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে যাচ্ছে না। এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিকস সদস্যরা এমন বিষয় নিয়ে কাজ করছে যা তাদের পশ্চিমা প্রভাব থেকে আরও মুক্ত বা বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
ব্রিকসের সদস্য রাষ্ট্র ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাতে রয়েছে বিকল্প পেমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলা যা যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের উপর নির্ভর করবে না। ব্রিকস ডিজিটাল মুদ্রা তৈরির ভাবনা উঠে এসেছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মানিটারি ফান্ড বা আইএমএফের মতো পশ্চিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিকল্প সংস্থা স্থাপনের কথাও ভাবা হয়েছে।
চীন, রাশিয়া ও ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। তাই এই দেশগুলি ব্রিকসে বর্ণিত লক্ষ্যগুলি পূরণের জন্য এবং তারা যাকে অবৈধ নিষেধাজ্ঞা বলে মনে করে তা ফাঁকি দিতে বিশেষভাবে আগ্রহী।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি সমানভাবে আগ্রহী। মোদি বলেছেন, “ব্রিকসের দেশগুলির মধ্যে আর্থিক সংহতি বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য এবং মসৃণ আন্তঃসীমান্ত পেমেন্ট আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে মজবুত করবে।”
রাশিয়ার স্টেট ডুমা স্পিকার ভ্যাচাস্লাভ ভলোদিন ক্লাউড-ভিত্তিক বার্তাবাহী অ্যাপ টেলিগ্রামে দুই দিবসীয় বৈঠকের আগে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ব্রিকসের অগ্রাধিকারের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে পশ্চিম ও দক্ষিণের মধ্যে বিভাজন। তিনি বলেছেন, “ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলসের আধিপত্যবাদের সময় শেষ হয়ে আসছে। দেশগুলি জনগণের স্বার্থে সম কথোপকথন ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমন্বয়ের পথ বেছে নিচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্র ও তার অনুগতদের তুষ্ট করতে চাইছে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জাঁ-পিয়ের সোমবার এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেছেন, “ব্রিকস এক ধরনের ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে বলে আমরা মনে করছি না। আমরা এটিকে এভাবে দেখি না…যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কারও কাছে।”