পাকিস্তানের রক্ষণশীল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নিজ বাড়িতে দুজন হিজড়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, দেশটিতে রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির লক্ষণ।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফাহিম খান জানান, রবিবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মারদান শহরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য অস্পষ্ট এবং কর্মকর্তারা এখনো তদন্ত করছেন এবং নিহতদের স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানালেও বিস্তারিত আর কিছু জানাতে তিনি রাজি হননি। এই ব্যক্তিরা এই হামলায় সরাসরি জড়িত কিনা তা নিশ্চিত বা অস্বীকার করতেও খান রাজি হননি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে রূপান্তরকামীরা প্রায়ই হয়রানি, নির্যাতন ও হামলার শিকার হন। তারা অনেক সময় আত্মীয়দের হাতে তথাকথিত অনার কিলিং-এর শিকার হন।
তবে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের সংসদ ট্রান্সজেন্ডার পাকিস্তানিদের আইনি লিঙ্গ স্বীকৃতির অনুমোদনসহ মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য ট্রান্সজেন্ডার পার্সনস (অধিকার সুরক্ষা) আইন গ্রহণ করে।
তবে দেশের অনেকের মধ্যে লিঙ্গ এবং যৌনতা সম্পর্কে গোঁড়া বিশ্বাস আছে এবং ট্রান্স লোকদের প্রায়শই বহিষ্কৃত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কেউ কেউ অর্থ উপার্জনের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি, নাচ ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছেন। তারাও হামলার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পরিচয়পত্রও দিয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার ট্রান্সঅ্যাকশন রাইটস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ফারজানা জান বলেন, জানুয়ারি থেকে প্রদেশটিতে বন্দুক হামলায় আরও নয়জন ট্রান্স ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আগের মামলাগুলোতে জড়িত হামলাকারীদের কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হয়নি, মূলত প্রসিকিউটররা মামলাগুলো গুরুত্বের সাথে নেননি।
হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে হিজড়া সম্প্রদায়।