অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আফগানিস্তানের তিনটি প্রদেশে মানুষসহ জীবন্ত কোন প্রাণীর ছবি দেখানো নিষিদ্ধ


ফাইল- তালিবানের একজন সদস্য তার হাত দিয়ে ক্যামেরা বন্ধ করছেন। কাবুল, আফগানিস্তান, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১।
ফাইল- তালিবানের একজন সদস্য তার হাত দিয়ে ক্যামেরা বন্ধ করছেন। কাবুল, আফগানিস্তান, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১।

তালিবান আফগানিস্তানের তিনটি প্রদেশে মানুষসহ ‌ যে কোন জীবন্ত প্রাণীর ছবি প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে । তাদের এই কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধ সাংবাদিকতা ও নাগরিক স্বাধীনতা গোষ্ঠীগুলি ব্যাপক সমালোচনা করেছে।

তালিবানের একজন কর্মকর্তা এ সপ্তাহে বলেন যে তাখার, কান্দাহার ও মায়দান ওয়ার্দাক প্রদেশগুলিকে জীবন্ত কিছুর ছবি দেখানো বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন তালিবান স্থানীয় মিডিয়ার লোকজনের সঙ্গে দেখা করেছে এবং বলেছে যে এই নিয়মটি তাদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজ্য।

ন্যায় প্রচার ও অন্যায় রোধ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম খাইবার বলেন, নতুন নৈতিকতা আইনের অংশ হিসেবে এই আদেশটি গোটা দেশেই আরোপ করা হবে। তিনি ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “ এই আইন সমস্ত আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে”।

মুখপাত্রটি আরও বলেন যে তালিবান জনগণকে এ কথা বোঝাবে যে জীবন্ত কোন কিছুর ছবি তোলা ইসলামি আইনের পরিপন্থি।

ছবির উপর এই নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে তালিবানের ইসলামের ব্যাখ্যা সম্বলিত নতুন অনুমোদিত আইনের অংশ। এই আইনে মুসলমানদের নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা কিংবা ইসলামি আইন লংঘন করা নিষেধ করা হয়েছে । তাছাড়া এতে নারীদের অধিকারও কমানো হয়েছে।

কর্মকর্তারা এর শাস্তি ঠিক কি হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তবে বলেছেন এটি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গত তালিবান আমলের অধীনে যে রকম শাস্তি ছিল সে রকমই হবে অর্থাৎ ছবি দেখানোর জন্য কারাদন্ড হবে।

সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন অফ রিপোটার্স ক্লাব এবং জার্নালিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গ্রান ভয়েস অফ আমেরিকা বলেছেন নতুন এই সব নির্দেশ মিডিয়ার জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়।

আফগান সাংবাদিক গোলাম জিলানি জোয়াক ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন যে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা “ নজিরবিহীন” এবং অন্য কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এমন নিষেধাজ্ঞা নেই।

বিশ্বব্যাপী অনেক ইসলামি বিশেষজ্ঞ জীবন্ত কারও ছবি বা ভিডিও দেখানোর ব্যাপারে আপত্তির কিছু দেখেন না।

জোয়াক বলেন, “ আমার মনে হয়’এর কারণ ( তালিবান সরকার) কর্তৃত্ববাদী সরকার। তারা মত প্রকাশের ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ভয় পায়; কাজেই তারা মিডিয়ার উপর এ রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে”।

তিনি বলেন যে তালিবান “ ভিন্ন মত পোষণকারীদের কিংবা তাদের সরকারের কোন রকম সমালোচনা সহ্য করে না”।

অধিকার বিষয়ক নজরদারি সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে তালিবান আমলে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

হিউমান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিষয়ক সহযোগী পরিচালক হিদার বার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন যে মানবাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরতে তালিবানের নির্দেশ ‘ তাৎপর্যটূর্ণ প্রভাব’ ফেলবে।

তিনি বলেন এই আইনটি আফগানিস্তানে নারী অধিকার কর্মীদের জন্য উদ্বেগজনক কারণ তারা তাদের কন্ঠস্বর তুলে ধরতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে থাকেন।

এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন ওয়াহিদ ফায়জি ও মোহাম্মদ আহমাদি

XS
SM
MD
LG