রুশ ভিন্নমতাবলম্বী ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অ্যালেক্সেই নাভালনি ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুবরণ করেন। মরণোত্তর স্মৃতিকথার বর্ণনা অনুযায়ী, আগে থেকেই কারাগারে মৃত্যুবরণের নিয়তি জেনে গিয়েছিলেন নাভালনি। বইটি ২২ অক্টোবর প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
শুক্রবার এই বইটির কিছু অংশ প্রকাশ করেছে দ্য নিউইয়র্কার। সেখানে কারাগারে থাকা অবস্থায় এবং এর আগে লেখা নাভালনির ডায়রির কিছু কথা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
২০২২ সালের ২২ মার্চ তিনি লেখেন, “জীবনের বাকি সময়টুকু আমি কারাগারেই কাটাব এবং এখানেই আমার মৃত্যু হবে।”
“বিদায় জানানোর মতো কেউ থাকবে না….আমাকে ছাড়াই সবগুলো বার্ষিকী উদযাপন করা হবে। আমি কখনোই আমার নাতী-নাতনীদের দেখতে পাব না।”
মেরু এলাকার একটি পেনাল কলোনিতে ১৯ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন নাভালনি। তার বিরুদ্ধে “উগ্রবাদের” অভিযোগ আনা হয়েছিল।
১৬ ফেব্রুয়ারি ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে চারিদিকে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং অনেকেই পুতিনকে এর জন্য দায়ী করছেন।
২০২০ সালে বিষক্রিয়ার শিকার হয়ে বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত জটিলতায় পড়েন নাভালনি। এরপর ২০২১ সালে রাশিয়ায় ফেরার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি তিনি লেখেন, “আমাদের জন্য একটাই ভয়ের বিষয় থাকা উচিৎ, আর তা হলো, আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে এমন একদল মিথ্যাবাদী, চোর ও ভণ্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হব, যারা একে লুটে নেবে।”
তার লেখনীতে কারাবরণের একাকীত্ব যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনই রয়েছে হাস্যরসের আভাস।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২২ সালের ১ জুলাই নাভালনি তার দৈনন্দিন জীবনের ফিরিস্তি দেন: সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠলাম, ৬টা বেজে ২০ মিনিটে নাস্তা খেলাম এবং ৬টা ৪০ মিনিটে কাজ শুরু করলাম।
“কাজ বলতে, হাঁটুর নিচের উচ্চতার একটি স্টুলে বসে আপনাকে সাত ঘণ্টা সেলাই মেশিন চালাতে হবে”, লিখেন তিনি।
“কাজ শেষে, পুতিনের কাঠের তৈরি একটি পোর্টেটের নিচে কাঠের বেঞ্চে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকতে হোত। এটাকে বলা হোত ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা।”
প্যাট্রিয়ট নামের বইটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশনা সংস্থা নফ বাজারে আনছে। এর একটি রুশ সংস্করণ প্রকাশেরও পরিকল্পনা আছে তাদের।