বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে। এতে দুটি মহল্লা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।
এক বছরে বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে বৈরুতের উপর এটি ছিল সব চেয়ে প্রাণঘাতী আক্রমণ । সেখানে উপস্থিত এপি’র একজন চিত্রগ্রাহকের মতে দু’টি ভিন্ন পাড়ায় দুটি আবাসিক ভবনকে লক্ষ্য করে এই আক্রমণ চালানো হয়। এর ফলে আট তলা একটি ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় এবং অন্য ভবনটির নীচের তলা বিধ্বস্ত হয়।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে তারা এই আক্রমণের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছে। সাধারণত ইসরায়েল বৈরুতের জনবহুল দক্ষিণ দিকের উপশহরগুলিতে আক্রমণ চালিয়ে থাকে, সেখানেই হেজবুল্লাহর অভিযানের ঘাঁটি রয়েছে।
এবারের এই আক্রমণের পর হেজবুল্লাহর আল মানার টিভি জানায় যে ওই গোষ্ঠীর একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওয়াফিক সাফাকে হত্যা করার একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলে সাফা ওই ভবন দুটির কোনটিতেই ছিলেন না।
এই আক্রমণের দিনেই ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর উপর ও গুলি চালিয়ে দু জনকে আহত করে। এতে ইসরায়েলের ব্যাপক নিন্দ হয়েছে এবং ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ স্বরূপ সেখানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন বৈরুতে আক্রান্ত ওই দুটি স্থানের ধ্বস্তূপের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ও লোকজনের ভিড় হয়ে যায। এই দুটি স্থান হচ্ছে রাস আল নাবা ও বুরজ আবি হায়দার।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে এই আক্রমণে ২২ জন নিহত ও ১১৭ জন আহত হয়েছেন তবে তাঁদের পরিচিতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
হেজবুল্লাহ বৃহস্পতিবারও ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ অব্যাহত রাখায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সাইরেন বেজে ওঠে। সামরিক বাহিনী বলেছে ইসরায়েলের দিকে নিক্ষিপ্ত কিছু ড্রোনকে বাধা দেয়া হয়।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানায় দেশটি এই সব আক্রমণের জবাব কি ভাবে দিচ্ছে তা আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রী সভার বৈঠক ডাকা হয়েছে।
অন্যদিকে লেবাননে অবস্থানরত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার মিশন , যারা ইউএনআইএফ এল নামে পরিচিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তাদের সদরদপ্তর এবং তাদের অবস্তানের উপর ইসরায়েলি বাহিনী “ বার বার আঘাত হেনেছে”।
তারা বলছে লেবাননের নাকৌরা শহরে তাদের সদর দপ্তরের পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক সরাসরি গুলি ছুড়েছে এবং সৈন্যরা একটি বাংকারে যার কাছেই শান্তিরক্ষীরা আশ্রয় নিয়েছিল। তাতে যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তারা বলছে বাংকারের প্রবেশ পথের কাছে একটি ইসরায়েলি ড্রোনকে উগতে দেখা যায়।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনীর আহত এই দুজন সৈন্য ইন্দোনিশয়ার নাগরিক এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।