অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারে গুলি, এক জেলে নিহত


বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত (রয়টার্স ফাইল ছবি)
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত (রয়টার্স ফাইল ছবি)

কক্সবাজারের টেকনাফে সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওসমান নামে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত এবং তিন জেলে আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে ৫০ কিলোমিটার দূরে সাগরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।

নিহত মো. ওসমান (৫০) টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারে মাছ ধরতেন তিনি।

আহত তিনজনও একই ট্রলারে ছিলেন। তাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘর্ষ

এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে।

জাতিগত সংখ্যালঘু রাখাইন আন্দোলনের প্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত সামরিক শাখা আরাকান আর্মি। তারা মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন চায়।

আরাকান আর্মি সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর একটি জোটের সদস্য। তারা সম্প্রতি মিয়ানমারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি কৌশলগত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সঙ্গে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে একত্রে কাজ করে আরাকান আর্মি। এই জোট ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর চীন সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে একটি সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই অভিযান মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী উত্তর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিংসাত্মক অভিযান শুরু করে। যা ছিল আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গুরুতর অপরাধ। তখন সেনাবাহিনী গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের ফলে, সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অন্তত ৭ লাখ ৪০ হাজার সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

পরবর্তীতে সংঘর্ষের কারণে কয়েক দফায় অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এ বছরের অগাস্টে নতুন করে ৮ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। ৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার কাছে তথ্য আছে, ৮ হাজারের মতো রোহিঙ্গা (বাংলাদেশে) ঢুকে গেছে।”

সর্বশেষ ৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে নয়টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার সৈকত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ৩৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। তাঁরা সবাই মিয়ানমারের মংডু শহরের সিকদারপাড়া, প্যারাংপুরো ও উকিলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

XS
SM
MD
LG