স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পুলিশের যেসব সদস্য এখনও কাজে যোগদান করেননি তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, "এছাড়া এখনও কাজে যোগদান না করা পুলিশ সদস্যদের আমরা পুলিশ বলব না। তাদের অপরাধী (ক্রিমিনাল) বলব।"
তিনি বলেন, "আমরা আনসার, পুলিশ ও বিজিবি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুই-এক দিনের মধ্যে উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি পাবেন।"
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা উপদেষ্টা কমিটির দ্বিতীয় সভায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
কতজন পুলিশ এখনও কাজে যোগ দেয়নি, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ১৮৭ জনের মতো ছিল। এর পরে মনে হয় আর কেউ যোগদান করেননি। যারা যোগ দেননি, তাদের আমরা অপরাধী হিসেবে গণ্য করব।
১,৯০,০০০ হাজার সদস্য সম্বলিত বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী এখনো বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে এবং তার প্রভাব দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে পড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ১৭ সেপ্টেম্বর দুই মাসের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয় ড. ইউনূসের নেতৃত্বধীন অন্তবর্তী সরকার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই ক্ষমতা পেয়েছেন।
সেনাবাহিনীর পর সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পুরো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সারা দেশে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যার ফলে বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর কমিশনড অফিসাররাও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
দুই মাসের মধ্যে পুলিশ বাহিনী সংস্কার করা হবে– এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ সংস্কারের কাজ ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার কথা। সংস্কারের কাজটা আমি করছি না, এজন্য আলাদা কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি কাজটি করবে। তারা আমাদের কাছে প্রতিবেদন দেবেন, সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সংস্কার হবে।
তিনি আরও বলেন, "আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আশুলিয়ায় শিল্পকারখানার ঝামেলা, অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ও মাদকের ব্যবহার রোধ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার সীমান্ত নিয়েও আমরা কথা বলেছি।"
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আসন্ন দুর্গাপূজা যাতে নির্বিঘ্ন হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবারের পূজা সবচেয়ে নির্বিঘ্ন হবে, সবচেয়ে ভালো হবে।"
উপদেষ্টা বলেন, "মাজার-দরগায় কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া যায়, বৈঠকে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে পোশাক খাত নিয়ে আমরা কথা বলেছি।"
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, শান্তিচুক্তি হওয়ার পর ইউপিডিএফ হাতিয়ার সমর্পণ করেনি। জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কেবল হাতিয়ার সমর্পণ করেছিল। ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঝামেলা আছে। অন্য যারা আছে, তাদের মধ্যেও ঝামেলা আছে। তারা মিলেমিশে কীভাবে থাকতে পারে, সেটা নিয়ে ব্যবস্থা করতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, অনেক সময় তারা বাইরে থেকেও কিছু অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন। ওটা যাতে না পায়, সেটার একটা ব্যবস্থা করতে হবে।