অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

টিআইবি পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিলকে 'মৌলবাদের কাছে সরকারের নতি স্বীকার' হিসেবে দেখছে


ফাইল ফটোঃ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ফাইল ফটোঃ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

দুর্নীতি বিরোধী গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি সোমবার (৩০শে সেপ্টেম্বর) একটি বিবৃতিতে, 'স্বার্থান্বেষী মৌলবাদী' হুমকির কাছে 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আপোষ'কে উদ্বেগজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে টিআইবি এই বিবৃতি দিয়েছে।

টিআইবি মনে করছে, সমন্বয় কমিটি বাতিলের এই সিদ্ধান্ত 'বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্খার প্রতি রীতিমতো প্রহসন।'

"হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ছাত্র-জনতা এমন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ সকল বৈচিত্র্য ও মতাদর্শের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে," টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন।

"আমরা আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বহুত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা ছড়িয়ে শঙ্কা ও হুমকির বাতাবরণ সৃষ্টির প্রচেষ্টা ক্রমেই উৎকট রূপ ধারণ করছে,” তিনি বলেন।

পাঠ্য পুস্তক নিয়ে বিতর্কঃ ঢাকার এক স্কুলের দৃশ্য। ফাইল ফটোঃ ১৮ অগাস্ট, ২০২৪।
পাঠ্য পুস্তক নিয়ে বিতর্কঃ ঢাকার এক স্কুলের দৃশ্য। ফাইল ফটোঃ ১৮ অগাস্ট, ২০২৪।

নীতিগত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সরকারের এমন আচরণকে 'নতি স্বীকার' বলেই মনে করছে টিআইবি।

ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, এই নতি স্বীকারের 'উদ্বেগজনক উদাহরণ' হলো পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিলের ঘটনা।

সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন এবং পরিমার্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে ১০ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেছিল।

এর ঠিক ১৪ দিন পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক অফিস আদেশে কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

‘ইসলাম বিদ্বেষী’

বাতিলের আগে কমিটি নিয়ে বিভিন্ন ইসলামভিত্তিক সংগঠন কমিটির কয়েকজন সদস্যকে ‘ইসলাম বিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করে তাদের বহিষ্কার দাবী করে।

কমিটি গঠনের পর সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় লিখেন “ধর্মপ্রাণ মানুষের সন্তানরা কি পড়বে, তা ঠিক করবে চিহ্নিত ধর্ম বিদ্বেষীরা!”

কমিটি থেকে দুজন সদস্যকে বাদ দেওয়ার জন্য মানববন্ধন করে ধর্মভিত্তিক একাধিক সংগঠন।

জামালপুরে ২৬শে সেপ্টেম্বর এক সভায় খেলাফত মজলিস নেতা মামুনুল হক, 'সমকামিতার প্রমোটকারী' উল্লেখ করে শিক্ষা কমিশনের দুজনকে বাদ দেয়ার দাবি জানান।

ধারণা করা হচ্ছে এই দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন ও সামিনা লুৎফা।

সোমবার সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ বলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা

XS
SM
MD
LG