বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিক এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং অন্তত চারজন আহত হয়েছে।
নিহত শ্রমিককে ২৬ বছর বয়সী কাওসার খান বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি ম্যাঙ্গো টেক্স লিমিটেডের একজন মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানা গেছে।
শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবীতে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ এবং র্যাবের যৌথ বাহিনীর সাথে সংঘর্ষ বাঁধে।
কাওসার খানকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। আরও দুজন শ্রমিক, রাসেল মিয়া এবং নয়ন, এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
“কাওসারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়,” হাসপাতালের একজন চিকিৎসক এনামুল হককে উদ্ধৃত করে ঢাকার ইংরেজি পত্রিকা দ্য ডেইলি স্টার জানায়। “তার পেটে একটি বুলেট প্রবেশ করেছিল। আহত দুজনের বুকে বুলেটের আঘাত রয়েছে।”
আশুলিয়া পুলিশ স্টেশনের অফিসার-ইন-চার্জ আবু বকর সিদ্দিক জানান, শ্রমিকরা সোমবার সকালে বেতন বৃদ্ধির দাবীতে বিক্ষোভ শুরু করে। তিনি বলেন, দুপুরের পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে যার ফলে তিনজন শ্রমিক আহত হন।
'ছররা নয়, তাজা বুলেট'
তবে হাসপাতালের চিকিৎসক এবং শ্রমিকরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলছেন, রাবার বুলেট বা ‘ছররা’ নয়, তাজা গুলিতেই শ্রমিকরা হতাহত হয়েছেন।
“নয়নের বুকের বাম পাশে গুলি লেগেছে। রাসেলের বুকে গুলি লেগেছে। এগুলো ছররা গুলি নয়। আহত দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক,” হাসপাতালের ডাক্তার এনামুল হককে উদ্ধৃত করে দ্য ডেইলি স্টার-এর বাংলা সংস্করণ জানায়।
শ্রমিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবারের মূল বিক্ষোভ হচ্ছিল মণ্ডল গ্রুপের কারখানায়, যেটা ম্যাঙ্গ টেক্স-এর সামনে অবস্থিত। অন্যান্য কয়েকটি কারখানা থেকে শ্রমিকরা বেরিয়ে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের সাথে যোগ দেয়।
শ্রমিক আর যৌথ বাহিনী মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায় বলে শ্রমিকরা দাবী করেন। সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের আশুলিয়ার পিএমকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
“'দুই শ্রমিক নাজমুল ও হাবিবকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়। আরও দুই আহত শ্রমিককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে,” পিএমকে হাসপাতালের অ্যাডমিন ম্যানেজার নাজিম উদ্দিনকে উদ্ধৃত করে ডেইলি স্টার বাংলা জানায়।
(এই রিপোর্টে ইউএনবি থেকে নেয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে)