মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জাতিভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জান্তা-বিরোধী বাহিনীগুলিকে সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করতে ও প্রস্তাবিত জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়েছে। তবে, লড়াই বন্ধের এই আহ্বানকে দ্রুততার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী বাহিনীগুলি। মিয়ানমারের তিন বছরব্যাপী গৃহযুদ্ধে এটি একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সটিটিউট অফ পিস-এর মিয়ানমার বিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ইয়ে মিয়ো হেইন বলেন, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সামরিক বাহিনী লড়াই বন্ধের যে আহ্বান প্রকাশ্যে এনেছে তার লক্ষ্য হল চীনকে সন্তুষ্ট করা।
মিয়ানমারের সামরিক শাসক এসএসির বিবৃতিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, জান্তা-বিরোধী আন্দোলনের সশস্ত্র শাখা পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সেস-সহ (পিডিএফ) জাতিভিত্তিক গোষ্ঠীগুলি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ও নির্বাচনী অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার নিরসন করুক।
যদিও এসএসি ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) কথা উল্লেখ করেনি। সাবেক আইনপ্রণেতা ও জান্তা-বিরোধীদের দ্বারা গঠিত এই ছায়া সরকারের সঙ্গে পিডিএফ ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত। এসএসি যুক্তি দিয়েছে, চলমান সংঘাতের ফলে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
এসএসি বলেছে, “সশস্ত্র লড়াই ও সন্ত্রাসবাদের কারণে দেশের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যাগুলি সমাধান করতে জাতিভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন ও পিডিএফ সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আহ্বান করা হচ্ছে।”
বিরোধী নেতারা সামরিক বাহিনীর এই লড়াই বন্ধের আহ্বানকে দ্রুত প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চীনল্যান্ড সরকারের (মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে চীন প্রদেশের অনেকাংশ এরা নিয়ন্ত্রণ করে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও এনইউজি-সম্পৃক্ত চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুই খার ভিওএ-কে বলেছেন, সামরিক বাহিনীর বিবৃতি উদ্দেশ্যবিহীন প্রস্তাব নয় কারণ এটি রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
এনইউজি-ও জান্তার এই আমন্ত্রণকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এই আহ্বানকে প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে অনৈক্য তৈরির ছক হিসেবে অভিহিত করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে যৌথ সীমান্ত বরাবর নিজেদের স্বার্থ ও বিনিয়োগ রক্ষা করতে বেইজিং মিয়ানমারের এসএসি ও জাতিভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য চাপ দিচ্ছে।