বেতন বাড়ানো সহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে সোমবার (২৩শে সেপ্টেম্বর) আশুলিয়ায় প্রায় অর্ধ শত কারখানা আবারো বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।
পুলিশ বলছে, ৪৩টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এছাড়া আরও আটটি কারখানায় সাধারণ ছুটি চলছে।
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সোমবার বকেয়া বেতনের দাবিতে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে তাদের সড়ক থেকে সরানো হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
"গত দুই মাসের বেতন বকেয়া। ১৫ তারিখে (১৫ই সেপ্টেম্বর) বেতন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেয়নি,” একজন শ্রমিককে উদ্ধৃত করে ঢাকার প্রথম আলো পত্রিকা জানায়।
“বাসাভাড়া দিতে পারতেছি না। কারখানায় আমরা কোনো ভাঙচুর করিনি। অন্য কারখানার লোকজন হামলা করছিলেন। এখন কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখছে। আমরা চাই আমাদের বেতন দিক, কারখানা খুলে দিক," তিনি বলেন।
শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
আশুলিয়ায় প্রায় দু’হাজার কারখানা রয়েছে, যার বেশির ভাগ রফতানিমুখী গার্মেন্টস কারখানা।
অগাস্ট থেকে শ্রমিক অসন্তোষ
এর আগে রবিবার (২২শে সেপ্টেম্বর) থেকে ন্যুনতম ২৫ হাজার টাকা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তাদের দাবির মধ্যে ছিল নাইট বিল বৃদ্ধির বাস্তবায়ন এবং টিফিন দেয়া।
সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়, রবিবার গাজীপুরে হাজিরা বোনাস বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে দুটি কারখানায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শ্রমিকরা। এসময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে।
শিল্প পুলিশ বলছে, এর আগে শ্রমিক অসন্তোষ থাকলেও গত সপ্তাহে দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনার পর শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে সুরাহা হয়েছিল, শনিবার পর্যন্ত বেশিরভাগ কারখানায় কাজ চলেছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) থেকে সোমবার (২৩শে সেপ্টেম্বর) জানানো হয়, সাভারের আশুলিয়ায় ২৭২টি পোশাক কারখানার মধ্যে ২৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়া সবেতন ছুটি কিংবা শ্রমিকেরা কারখানায় উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ রেখেছেন অথবা শ্রমিকেরা চলে গেছেন —এমন কারখানার সংখ্যা ১২। আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৬৭টি এবং বেতন পরিশোধ করেনি ৫টি কারখানার মালিক।
গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তৈরি পোশাক খাত এবং দেশের অনেক শিল্প কারখানায় চলছে অস্থিরতা। চলতি মাসের ৬ তারিখ নানা পক্ষের আলোচনায় কারখানা চালুর কথা ঘোষণা করা হলেও অনেক শ্রমিকের মধ্যে অসন্তোষ আবারো দানা বেঁধেছে চলতি সপ্তাহে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঢাকা ও এর আশেপাশের শিল্প এলাকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যৌথ বাহিনী নিয়োজিত করেছে। সরকার ১৭ই সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়।