ইসলামি জঙ্গিরা মালির রাজধানী বামাকোতে মঙ্গলবার একটি সামরিক পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালালে মারাত্মক বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, সেনা সদস্যরা আক্রমণকারীদের কাবু করার আগে কাছের একটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়।
হতাহতের কোন সংখ্যা তাৎক্ষনিকভাবে পাওয়া যায়নি।
আক্রমণকারী জঙ্গিরা বামাকোর ফালাদি সামরিক পুলিশ স্কুলে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করে। সেনা বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ উমার দিয়ারা জাতীয় টেলিভিশনে বলেন, সরকারী সৈন্যরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আক্রমণকারীদের “পরাস্ত” করতে সক্ষম হয়।
আক্রমণের ফলে “প্রাণহানি এবং সম্পত্তির ক্ষতি” হয়েছে বলে একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কে জানিয়েছেন।
অন্তত ১৫জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা জানান, যিনি আক্রমণের সময় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভেতরে ছিলেন।
আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএনআইএম তাদের ওয়েবসাইট আযালাক-এ এই আক্রমণের দায় দাবী করে। গোষ্ঠীটি দাবী করে তারা “বড় মাপের প্রাণহানি এবং সম্পত্তির ক্ষতি” সাধন করেছে এবং বিমানে আগুন দিয়েছে। এ’ধরনের গোষ্ঠী প্রায়ই অতিরঞ্জিত দাবী করে থাকে।
রাজধানী বামাকো নিয়ন্ত্রণে
মালির কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার জানায়, ভোরের আগে বিদ্রোহীরা একটি সামরিক পুলিশ প্রশিক্ষণ স্কুল ও অন্যান্য এলাকায় হামলা চালানোর পর রাজধানী বামাকো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলায় গোলাগুলির শব্দ শহরজুরে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, “আজ ভোরে একদল সন্ত্রাসী ফালাদি সামরিক পুলিশ স্কুলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। বর্তমানে মপিং আপ অপারেশন চলছে। ”
বিবৃতিতে বাসিন্দাদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার এবং পরবর্তী আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সামরিক সরকার জানিয়েছে, সামরিক পুলিশ স্কুলসহ রাজধানীর কয়েকটি স্পর্শকাতর এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে।
সেনাবাহিনী হামলার জন্য দায়ী ‘সন্ত্রাসীদের’ প্রতিহত করেছে এবং বেসামরিক লোকজনকে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক পুলিশ স্কুলটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বামাকর দক্ষিণ-পূর্ব উপকন্ঠে ফালাদিতে অবস্থিত। রয়টার্স সূর্যোদয়ের আগে ফালাদির কাছে বানানকাবৌগৌ এলাকায় গুলির শব্দ শুনেছে। সকালের নামাজের জন্য মসজিদের দিকে যাওয়া লোকজন গুলির শব্দে ফিরে যায়।
গ্রিনিচ মান সময় ভোর সাড়ে ৫টারদিকে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। কিছু বাসিন্দা বলেন, গোলাগুলির শব্দ বিমানদন্দরের দিক থেকে এসেছিল। অন্যরা বলেছে, এটি সামরিক পুলিশের দিক থেকে আসছে।
একটি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, প্রধান বিমানবন্দরের নিকটবর্তী এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গুলির শব্দ শোনা গেছে।
অপর একটি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মধ্যে মালি অন্যতম, যারা ইসলামি সশস্ত্র বিদ্রোহ মোকাবেলা করছে। এই বিদ্রোহ ২০১২ সালে মালির শুষ্ক উত্তরাঞ্চলে শিকড় গেড়েছিল এবং তারপর থেকে সাহেল জুড়ে এবং সম্প্রতি উপকূলীয় দেশগুলোর উত্তরে ছড়িয়ে পড়েছে।
আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের সাথে সম্পৃক্ত জঙ্গিদের অগ্রযাত্রা এবং তাদের পিছু হটানোর সামরিক প্রচেষ্টার মধ্যে এই অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সরকার ও যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে।