অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মহাকাশে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে 'স্পেসওয়াকের' পর কোটিপতি ফিরে এসেছেন


পোলারিস মিশনের 'ড্র্যাগন; ক্যাপ্সুল ফ্লোরিডার কাছে মেক্সিকো উপসাগরে অবতরণ করছে। ফটোঃ ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।
পোলারিস মিশনের 'ড্র্যাগন; ক্যাপ্সুল ফ্লোরিডার কাছে মেক্সিকো উপসাগরে অবতরণ করছে। ফটোঃ ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

একজন আমেরিকান কোটিপতি মহাকাশে পাঁচদিন কাটানোর পর তিনজন ক্রু নিয়ে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার চন্দ্র অভিযানের অ্যাস্ট্রনটদের পর তিনি অন্যদের চেয়ে বেশি উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন।

ফ্লোরিডা রাজ্যের ড্রাই টোরটুগাসের কাছে মেক্সিকো উপসাগরে স্পেস এক্স-এর ক্যাপসুল গভীর রাতের আঁধারে অবতরণ করে। ক্যাপসুলে ছিলেন প্রযুক্তি শিল্পে উদ্যোক্তা জারেড আইসাকম্যান, স্পেস এক্স-এর দুজন ইঞ্জিনিয়ার এবং একজন প্রাক্তন বিমান বাহিনী পাইলট।

তারা পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৬০ মাইল দূরের কক্ষপথে চলার সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং খরচে মহাকাশে প্রথম হাঁটা-চলা বা স্পেসওয়াক সম্পন্ন করেন। তখন তারা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন এবং হাবল স্পেস টেলিস্কোপ থেকেও আরও উঁচুতে ছিলেন।

গত মঙ্গলবার উৎক্ষেপণের পর তাদের মহাকাশযান সর্বোচ্চ ৮৭৫ মাইল (১,৪০৮ কিলোমিটার) উচ্চতায় উঠে।

প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন-এর কসমোনট ১৯৬৫ সালে প্রথমবার স্পেসওয়াক করার পর আইসাকম্যান হলেন ২৬৪তম ব্যক্তি যিনি মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে মহাশূন্যে গেলেন। তাঁর পর স্পেস এক্স-এর সেরাহ গিলস ২৬৫তম স্পেসওয়াকার হন। এ’পর্যন্ত সকল স্পেসওয়াক করেছেন পেশাজীবী মহাকাশচারীরা।

“আমাদের অভিযান সম্পন্ন হয়েছে,” আইসাকম্যান রেডিও মারফত খবর পাঠান যখন তাদের ক্যাপসুলে পানিতে ভাসছে এবং উদ্ধারকারী দলের জন্য অপেক্ষা করছে।

এক ঘণ্টার মধ্যে ক্যাপসুলের চারজন আরোহী মহাকাশযান থেকে বের হয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।

TOPSHOT - This still image taken from a SpaceX and Polaris broadcast on September 12, 2024, shows US fintech billionaire Jared Isaacman (EV1) peeking out to space from a hatch structure called "Skywalker", during the first private spacewalk performed by t
জারেড আইসাকম্যান মহাকাশে ক্যাপসুল থেকে বের হওয়ার দৃশ্য। ফটোঃ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

এই প্রথমবার স্পেস এক্স ড্রাই টোরটুগাসের কাছে পানিতে তাদের ক্যাপসুল অবতরণ করায়। ফ্লোরিডার কী ওয়েস্ট থেকে ৭০ মাইল দূরে ড্রাই টোরটুগাস মুলত ৭০টি দ্বীপের একটি গুচ্ছ। অবতরণের নতুন স্থান উদযাপন করার জন্য স্পেস এক্স-এর কর্মীরা ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত কোম্পানির সদর দফতরে কচ্ছপ আকারের একটি বিরাট সবুজ রঙের বেলুন নিয়ে আসে।

স্পেস এক্স সাধারণত ফ্লোরিডা উপকূলের আরও কাছে অবতরণ করার চেষ্টা করে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে আবহাওয়া প্রতিকুল থাকায় তারা অন্যত্র দৃষ্টি দেয়।

বৃহস্পতিবারের বাণিজ্যিক স্পেসওয়াকের সময় ‘ড্র্যাগন’ ক্যাপসুলের দরজা আধা ঘণ্টারও কম সময় খোলা ছিল। আইসাকম্যান ক্যাপসুল থেকে শুধু তাঁর কোমোড় পর্যন্ত বের হয়ে স্পেস এক্স-এর নতুন স্পেস পোশাক পরীক্ষা করেন। তারপরে আসেন গিলস, যিনি তার হাঁটু পর্যন্ত বের হয়ে কয়েক মিনিট ধরে হাত এবং পা নাড়া-চাড়া করেন।

স্পেসওয়াকের পুরো প্রক্রিয়া চলে দু’ঘণ্টারও কম সময় ধরে, যেটা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের স্পেসওয়াকের চেয়ে অনেক কম সময়। বেশির ভাগ সময়ের প্রয়োজন ছিল পুরো ক্যাপসুলকে ‘ডিপ্রেসারাইজ’ করে কেবিনে বায়ু চলাচল স্বাভাবিক করতে। এমনকি স্পেস এক্স-এর ক্রু অ্যানা মেনন এবং স্কট পোটিটকে ক্যাপসুলের ভেতরে স্পেস পোশাক পরে থাকতে হয়েছিল।

স্পেস এক্স এই সংক্ষিপ্ত অভিযানকে তাদের স্পেস পোশাকের প্রযুক্তি পরীক্ষা করার পথম ধাপ হিসেবে দেখছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে মঙ্গল গ্রহে অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেয়া।

এটা ছিল স্পেস এক্স-এর সাথে আইসাকম্যানের দ্বিতীয় ভাড়া করা ফ্লাইট। তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে পোলারিস নামে মহাকাশ অনুসন্ধান প্রকল্পের অধীনে আরও দুটি স্পেসফ্লাইট বাকি আছে।

তিনি ২০২১ সালে প্রথমবার মহাকাশ ভ্রমণ করেন, তবে কত ভাড়া দিয়েছিলেন তা প্রকাশ করা হয়নি। সেবার তাঁর সাথে গিয়েছিলেন প্রতিযোগিতা বিজয়ী এবং একজন ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা রোগী। এই যাত্রার মাধ্যমে তিনি সেন্ট জুড চিল্ড্রেন’স রিসার্চ হাসপাতালের জন্য ২৫ কোটি ডলার সংগ্রহ করেন।

XS
SM
MD
LG