আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা, যৌথবাহিনীর অভিযান এবং শ্রমিকনেতা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের আশ্বাসের পরও সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ থামছে না।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে দেখা যায়। আবার অনেকে কারখানা বন্ধ দেখে ফিরে যায়। যেসব কারখানায় কাজ চলছিল সেগুলোতেও পরে অসন্তোষ দেখা যায়। কাজ ফেলে বের হয়ে যান শ্রমিকেরা।
চলমান অসন্তোষ প্রশমনের প্রচেষ্টার মধ্যে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রায় ৪৫টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া, সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে আরও ৬০টি পোশাক কারখানা। ৬০টি কারখানার মধ্যে ২৫টি কারখানা ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ (বিনা বেতনে ছুটি) ভিত্তিতে ছুটি ঘোষণা করেছে।
পোশাক কারখানা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১–এর পুলিশ সুপার মো. সরোয়ার আলম।
তিনি বলেন, শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী 'নো ওয়ার্ক নো পে' শর্ত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ অনুযায়ী, 'অবৈধ' ধর্মঘটের কারণে মালিক কোনো প্রতিষ্ঠানের শাখা বা বিভাগ আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারেন এবং ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকেরা কোনো মজুরি পাবেন না।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ৬১ দশমিক ০৫ শতাংশ কারখানা অগাস্ট মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে।
গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ১৩(১) ধারা অনুযায়ী কারখানা বন্ধ থাকাকালে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে না, যা তাদের হতাশা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মঙ্গলবার বিকেলে জামগড়া, নরসিংহপুর ও পুকুরপাড় এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন কারখানা মালিকেরা।
অন্যদিকে বিভিন্ন দাবিতে সকাল থেকে নবীনগর–চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে একটি কারখানার শ্রমিকেরা। এর ফলে মহাসড়কটিতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে তৈরি পোশাক শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
শিল্পাঞ্চলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।