অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের লাইন অব ক্রেডিট প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা


অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এগুলো অব্যাহত থাকবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, "এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং আমরা এগুলো অব্যাহত রাখব।"

উপদেষ্টা এই প্রকল্পগুলো অগুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ার কোনো অবকাশ রাখেননি।

আলোচনাকালে ড. সালেহউদ্দিন ভারতীয় হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করে বলেন, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।

ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. সালেহউদ্দিন ভবিষ্যতে সহযোগিতার পারস্পরিক সুবিধার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "আমরা সহযোগিতা বাড়বে এ প্রত্যাশায় রয়েছি।"

ভারতের বিদ্যমান তিনটি এলওসি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও বিতরণ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং ভারতীয় পক্ষ এবিষয়ে মতামত নিয়েছে।

ভারতকে প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, দুই দেশ তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপায় খুঁজেছে।

ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, এগুলো বাংলাদেশের চাহিদার আলোকে শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও কিছু বিতরণ সমস্যা রয়েছে, আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’

ভবিষ্যতের জন্য ভারতীয় অর্থায়নের আওতায় নতুন প্রকল্পগুলোর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, "আমাদের যা আছে তা নিয়ে আমরা থেমে থাকব না। ভবিষ্যৎ প্রকল্প, সেগুলোর অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চলছে।"

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি স্বীকার করে এটি মোকাবিলা করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. সালেহউদ্দিন।

তিনি আরও জানান, ভারতীয় হাইকমিশনার তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে উভয় পক্ষেরই যেন সুবিধা হয় এমনভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আরও মানসম্পন্ন রপ্তানিকে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চলছে।

বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং গবেষণাগারের উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে থাকে ভারত।

ভারত বাংলাদেশে তাদের কোনো এলওসি প্রকল্প বন্ধ করেনি জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো চলমান এবং বিভিন্ন খাতে বিস্তৃত বড় উদ্যোগ। ঠিকাদাররা আবার কাজে ফিরবেন।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভার্মা বলেন, 'আমরা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত রয়েছি এবং উপদেষ্টার সঙ্গে আমার বৈঠক তার প্রমাণ।’

প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা হবে।

ভারতীয় অর্থায়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন হাইকমিশনার এবং এই প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে জোর অঙ্গীকার জানান।

বাংলাদেশ ও ভারত এ পর্যন্ত তিনটি লাইন অব ক্রেডিট চুক্তি সই করেছে। প্রথমটি, ৮৬২ মিলিয়ন ডলারের যা ২০১০ সালের আগস্টে সই হয়। দ্বিতীয়টি, ২ বিলিয়ন ডলারের যা ২০১৬ সালের মার্চে সই হয়। এবং তৃতীয়টি সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের যা ২০১৭ সালের মার্চে সই হয়।

XS
SM
MD
LG